বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) গুলশানের ইমান্যুয়েলস অডিটোরিয়ামে সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এম এম নিয়াজউদ্দিনের জাতীয় পার্টিতে যোগদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঢাকা শহর বর্তমানে বাসের অযোগ্য শহরে পরিণত হয়েছে।
জাতীয় পার্টি অনেক অত্যাচার সহ্য করেছে, তবে এখন জবাব দেয়ার সময় এসেছে উল্লেখ করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, আমরা অনেক অত্যাচারের স্বীকার হয়েছি। ক্ষমতা ছাড়ার পর আমার নামে ৪২টি মামলা দেয়া হয়েছিল। আমার পুরো পরিবারকে জেল খাটানো হয়েছিল। একজন সাবেক সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতির স্ত্রীকে জেলে মাটিতে শুতে দেয়া হয়েছিল ও কোনো প্রকার সম্মান দেয়া হয়নি। আমাদের নিঃশেষ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে ও জনগণের দোয়ায় আমরা বেচে আছি, জাতীয় পার্টি টিকে আছে এবং থাকবে। আর সময় এসেছে জবাব দেয়ার ও ক্ষমতায় আরোহন করার।
রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে ময়দানে দেখা যায় না উল্লেখ করে সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, রাজনীতির মূল স্থান মাঠে ময়দানে জনগণের পাশে। শুধু বক্তৃতা আর অনুষ্ঠানে না। কিন্তু দেশের বড় একটি রাজনৈতিক দল বিএনপিকে দেখা যাচ্ছে তারা জনগণের পাশে নেই। এটা বিরোধী দলের রাজনীতি হতে পারে না। বর্তমানে জনগণ আওয়ামী লীগ, বিএনপি কারোর উপরেই নির্ভর করতে পারছে না। তারা জাতীয় পার্টির উপর নির্ভর করতে পারছে, তার প্রমাণই আজকের এই যোগদান অনুষ্ঠান। এ রকম অনুষ্ঠান আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা অন্য কোনো দলে দেখা যায় না।
এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে থেকে জাতীয় পার্টি নির্বাচন করতে চায় না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিশতীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, দলটির মহাসচিব সংসদ সদস্য এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার, কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সেন্টুসহ দলটির সব প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরা।
এ সময় রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টিতে যোগ দিলে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করা যাবে, সেটা বুঝেই এম এম নিয়াজউদ্দিন এই দলে এসেছেন। জনগণ সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে এখন বুঝতে পারছে কাকে দিয়ে দেশের উন্নতি হবে। আমাদের প্রথম যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল ভূমি সংস্কার আইন। যার সুফল মানুষ এখনও ভোগ করছে। এছাড়া খেলাধুলায় যে সাফল্য তার ভিত্তিপ্রস্তর আমরাই স্থাপন করেছিলাম। যমুনা সেতু গঠনেরও মূল অবদান আমাদেরই। তথা দেশের বর্তমান উন্নয়নমূলক সব কর্মকাণ্ডের ভিত্তিপ্রস্তর জাতীয় পার্টি স্থাপন করে গেছে।
এ সময় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এম এম নিয়াজউদ্দিনকে ফুলের তোড়া দিয়ে জাতীয় পার্টিতে বরণ করে নেন।
নিয়াজউদ্দিন বলেন, চাকরি জীবন শেষ করে আমি নতুন আর এক জীবন শুরু করেছি জাতীয় পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে। মানবসেবা করার ইচ্ছা আমার আগে থেকেই ছিল। যে কারণে চাকরিরত অবস্থায় গাজীপুরে মেডিকেল কলেজসহ অসংখ্য হাসপাতাল স্থাপনের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবাকে উন্নত করেছি। এখন এ সুযোগ পাওয়ার পর আরও ভালোভাবে মানবসেবা করতে পারবো। আমি এরশাদসহ জাতীয় পার্টিকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে এ বৃহৎ ও মহৎ কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৭
এমএএম/এসএইচ