ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

বিশ্বের অদ্ভুত যত বাড়িঘর!

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৩
বিশ্বের অদ্ভুত যত বাড়িঘর!

বাড়ি হয় নানা রকমের। ইট-কাঠের বদ্ধ দালান ছাড়াও রয়েছে নির্জন কোলাহলমুক্ত গ্রামে সবুজের মাঝে, প্রকৃতির কাছে ছোট্ট কুটির।

শুধু ধরণই নয়, বৈচিত্র্য আছে বাড়িঘরের রং, আকার-আকৃতিতেও। তবে কিছু কিছু বাড়ি একদমই অন্যরকম। একটু বেশিই বিচিত্র। সেগুলো দেখলে মুগ্ধ যেমন হতে হবে, প্রশংসা করতে হবে মানুষের বুদ্ধির পরিধিরও। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তেমন কিছু অদ্ভুত বাড়ির কথাই জানাচ্ছি আজকে।

গাছের গুঁড়ির বাড়ি
গাছের গুঁড়ির ভেতর থাকার কথা শুনলে মনে হতে পারে কার্টুনের কথা। বিভিন্ন কার্টুনে দেখা যায় পশুপাখিদের খুব আরাম করে গাছের ভেতর বাড়িঘর বানিয়ে বসবাস করতে। তবে কার্টুন নয়, সত্যি সত্যিই গাছের গুঁড়ির ভেতর বাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন দু’জন ব্যক্তি! এ গাছের গুঁড়ি বাড়িটা আসলে প্রায় দু’হাজার বছর পুরনো একটি রেডউড গাছের গুঁড়ি। আর সেই গুঁড়িটাকেই বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করার বুদ্ধি করেন দুই ব্যক্তি। এই মজার বাড়িটি রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার গ্যারবারভিলে। বর্তমানে এর মালিক ড্যান ব্যালেম নামক এক ব্যক্তি। বাড়িটিতে একটি ড্রয়িং রুম, একটি বেডরুম এবং একটি ডাইনিং রুম রয়েছে।

বিমানবাড়ি
শখের বশেই ২০০০ ডলার দিয়ে ব্যবহৃত একটি বোয়িং ৭২৭ বিমান কিনেছিলেন জোয়ান উসারি। এর সঙ্গে আরও ২৮ হাজার ডলার ব্যয় করে ঘঁষেমেজে সাজিয়ে গুছিয়ে রীতিমতো বাড়িঘর বানিয়ে ফেললেন বিমানটিকে। বসবাসও শুরু করলেন বিমানের ভেতর। এ বিমানবাড়িটি মিসিসিপির বেনোয়েটে অবস্থিত।

স্পেসশিপে বসবাস
এলিয়েনের অস্তিত্ব আছে কী নেই, তা নিয়ে রয়েছে দ্বন্দ, তর্ক, মতভেদ। তবে এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণীদের নিয়ে কম-বেশি সবারই আগ্রহ আছে। যাদের এলিয়েন ও স্পেসশিপ নিয়ে তুমুল আগ্রহ, তাদের জন্য সুখবর। পৃথিবীতে বসেই কিন্তু এলিয়েনদের স্পেসশিপে থাকার ব্যবস্থা আছে!

২০০০ স্কয়ার ফুটের এ স্পেসশিপ বাড়িটি রয়েছে টেনিসির চাটানুগায়। ১৯৭৩ সালে কার্টিস কিং এই বাড়ি নির্মাণ করেন। কেউ চাইলে ভাড়া নিয়ে এখানে থাকতে পারেন, তবে পৃথিবীতে বসেই স্পেসশিপে থাকার জন্য টাকা গুণতে হবে একটু বেশিই।

নটিলাস:
নটিলাস নামটা শুনলেই মনে পড়ে ‘টোয়েন্টি থাউজ্যান্ড লিগস আন্ডার দ্যা সি’ বইটির ক্যাপ্টেন নিমোর সেই বিখ্যাত নটিলাসের কথা। আর মেক্সিকো সিটিতে অবস্থিত নটিলাস বাড়িটি সেই সাবমেরিনের মতো না হলেও নামের সার্থকতা রয়েছে। কারণ সমুদ্রের আবহ রয়েছে এই নটিলাসে। ২০০৬ সালে বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর শরীরের আকৃতিতে এ বাড়িটির নকশা করেন জ্যাভিয়ের সেনসোনিয়ান।  
 
জুতোই যখন বাড়ি
জুতোর মধ্যে বসবাসের কথা শুনলে মনে হতে পারে গালিভারের ভ্রমণকাহিনীর সেই লিলিপুট রাজ্যের লিলিপুটদের কথা। তবে পেনিসিলভানিয়ার হেলামে অবস্থিত জুতো বাড়টির ক্ষেত্রে ঘটনা আসলে উল্টো। মানুষ লিলিপুট নয়, জুতোটাই দৈত্যাকৃতির। ১৯৪৮ সালে ম্যাহলন এন হাইনেস তার জুতোর বিজ্ঞাপনের জন্য এই বাড়ির নকশা করেন। এই জুতো বাড়িতে তিনটি বেডরুম, দুটি বাথরুম, রান্নাঘর এবং ড্রয়িং রুম রয়েছে। বর্তমানে কারলিন ফ্যারাবাগ এবং তার স্বামী এটিকে তাদের গ্রীষ্মকালীন বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করেন।

পিপের মতো বাড়ি:
হ্যাঁ, তরল পদার্থ সংরক্ষণের পাত্র- মানে পিপের মতো বাড়িও আছে। এটি রয়েছে মিশিগানের গ্র্যান্ড মারাইসে। প্রথমে মালিকেরা এটিকে কতেজ হিসেবে ব্যবহার করলেও পরবর্তীতে এটিকে গ্র্যান্ড মারাইসের একটি সেন্ট্রাল স্ট্রিটে স্থানান্তারিত করা হয় এবং এখানে স্থানীয় তথ্য কেন্দ্র স্থাপিত হয়।

কেটলিতে বসবাস:  
কেটলির ভেতরে চা বা কফি থাকা স্বাভাবিক হলেই কেতলির ভেতরে মানুষও থাকে কিন্তু! তবে সাধারণ কেটলি নয়, বলছি উইসকনসিনের জিলাহে অবস্থিত কেটলি বাড়ির কথা। জ্যাক আইনসওর্থের নকশা করেন। ১৯২২ সালে তৈরির পর এটিকে বিভিন্ন সময় স্থানান্তারিত করা হয়েছে।

টয়লেট বাড়ি:
নাম শুনে নাক সিঁটকালেও সাউথ কোরিয়ার সুওনে অবস্থিত এ টয়লেট বাড়ি দেখার পর জে ডাকের বুদ্ধির তারিফ করতেই হবে। তিনিই এই বাড়িটির নকশা করেছেন। ২০০৭ সালে ‘ওয়ার্ল্ড টয়লেট অ্যাসোসিয়েশন’- এর উদ্বোধনী সভা উপলক্ষে সুওনের মেয়র এটি তৈরি করেন।

পাথরবাড়ি:
পাথর দিয়ে তৈরি বাড়ি রয়েছে অনেক, কিন্তু পর্তুগালের নাস মন্টানহাস ডি ফাফে নামক স্থানের পাথরবাড়িটি মোটেও আর দশটি পাথরে তৈরি বাড়ির মতো নয়। দু’পাশে বিশাল দুটি পাথর এমনভাবে আগলে আছে বাড়িটিকে, যে দেখলে আসলে মনে হবে কোনো এক সময়ে তৈরি একটি বাড়ি দুটো বড় বড় পাথরের মধ্যে হয়তো চাপা পড়ে গেছে। ১৯৭৪ সালে এটি তৈরি করা হয়। এখানে বিদ্যুৎ বা পানির কোনো সংযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ০২২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৩
এমএনএনকে/এএ/এসএইচ/এমজেডআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।