রাস্তায় যদি ল্যাম্পপোস্ট না থাকে তবে কেমন হবে? রাতের বেলায় খুব ভোগান্তি হবে। তবে রাস্তাটা নিজেই যদি আলো ছড়ায় তাহলে আর ভোগান্তি হওয়ার কথা নয়।
ক্যামব্রিজের এই রাস্তাটিকে বলা হয় স্টার পাথ। রাতের বেলায় আকাশের তারার মতো মিটিমিটি জ্বলে বলেই এমন নামকরণ হয়েছে রাস্তাটির।
রাতের বেলায় যদি স্টার পাথ দিয়ে হেঁটে যান, মনে হবে যেন অসংখ্য তারার উপর দিয়ে হাঁটছেন। হালকা নীলচে স্বর্গীয় আভা ছড়ানো রাস্তাটিকে স্বর্গে যাওয়ার রাস্তা বললে ভুল হবে না।
ক্যামব্রিজের ক্রাইস্টস পিসেস পার্কে অবস্থিত স্টার পাথ নামক রাস্তাটি আসলে প্রকৃতির খেয়াল নয়। এটি মানুষের বুদ্ধি ও বিজ্ঞানের উন্নতির এক জ্বলন্ত প্রমাণ।
ইউকে ভিত্তিক কোম্পানি প্রো-টেক এক ধরনের বিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগ করে রাস্তাটিকে আলোকিত করেছে। এই পদ্ধতিতে রাস্তার উপর বিভিন্ন পদার্থের একটি মিশ্রণ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যাকে বলা হয় ফটোলুমিনসেন্ট স্প্রে। এটি দিনের বেলায় ইউভি রশ্মি শুষে নেয় ও রাতের বেলায় জ্বলজ্বল করে।
প্রো-টেক কোম্পানির মতে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে রাস্তাগুলোকে আলোকিত করলে আর ল্যাম্পপোস্টের প্রয়োজন হবে না। আর এই ল্যাম্পপোস্ট ছাড়া রাস্তা আলোকিত করার প্রযুক্তিকে তাই বলা হচ্ছে ভবিষ্যতের রাস্তা আলোকিত করার প্রযুক্তি। স্টার পাথও খ্যাতি পেয়ে গেছে ভবিষ্যতের রাস্তা হিসেবে।
প্রো-টেকের স্বত্বাধিকারী হ্যামিশ স্কট বলেন, এটি এমন একটি পদ্ধতি যা পরিবেশবান্ধব, আর এতে শক্তির অপচয়ও হবে না।
স্টার পাথের এই প্রযুক্তিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে শক্তির অপচয় কমিয়ে আনার ইচ্ছে পোষণ করেন স্কট। প্রো-টেক কোম্পানির হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে প্রতি স্কয়ার মিটার রাস্তা মেরামত করে এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে খরচ হচ্ছে ৭০ পাউন্ড।
প্রায়ই আমরা ভালো কাজের কথা বোঝাতে আলোর পথের কথা বলে থাকি। এই স্টার পাথ কিন্তু সত্যিকারের আলোর পথ। তাই এখান দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আপনি ভাবতেই পারেন, হেঁটে যাচ্ছেন আলোর উপর দিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৩