ব্রিটিশ অভিনেত্রী আঁন্দ্রে হেপবার্নের সঙ্গে তোমরা কী পরিচিত? খ্যাতিসম্পন্ন এই অভিনেত্রী কিন্তু একজন অসাধারণ মানুষ ছিলেন, ছিলেন এক মহিয়সী নারী। শুধু একজন অভিনেত্রীই নয়, হেপবার্ন ছিলেন পরোপকারী বন্ধুও।
১৯২৯ সালের ৪ মে বেলজিয়ামে জন্ম হেপবার্নের। জন্মের পর তার নাম রাখা হয় আঁন্দ্রে ক্যাথরিন রাস্টন। তার বাবা জোসেফ ভিক্টর অ্যান্থনি রাস্টন এবং মা ব্যারোনেস এলা ভ্যান হিমস্ট্রা।
হেপবার্ন ছোট থাকতেই তার বাবা মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর ১৯৩৭ সালে মায়ের সঙ্গে হেপবার্ন পাড়ি জমান দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের কেন্টে। সেখানেই একটা ছোট্ট স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সেখান থেকে অন্যত্র সরে যান তারা।
১৯৪৪ সালের মধ্যেই একজন ব্যালে নাচিয়ে হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ডাচ প্রতিরোধের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে গোপনে নাচ করতেন তিনি।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে হেপবার্ন তার মায়ের সঙ্গে চলে আসেন আর্মস্টারডামে। সেখান তিন বছর ব্যালে নৃত্য শেখেন তিনি। ১৯৪৮ সালে ব্যালে শিখতে মায়ের সঙ্গে যান লন্ডনে।
এরপর হেপবার্ন মডেল হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং কোরাস গার্ল হিসেবেও কাজ করেন। এসবই তাকে করতে হয়েছিল অর্থ উপার্জনের জন্য। লন্ডনের থিয়েটারেও অভিনয় করেছিলেন হেপবার্ন। ১৯৫১ সালে কিছু চলচ্চিত্রে ছোট-খাটো চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
১৯৫৩ সালে রোম্যান্টিক কমেডি ‘রোমান হলিডে’-তে কাজ করার পর ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন আঁন্দ্রে হেপবার্ন। প্রশংসিত হয় তার অভিনয়। পান অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড। ছবিটির সাফল্যের পর হেপবার্ন আরো কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পান। সাবরিনা, দ্য নানস স্টোরি, বিখ্যাত কমেডি ছবি দ্য চারার্ডস, ওয়েট আনটিল ডার্ক সহ বিভিন্ন ছবিতে অভিনয় করেন। তিনি হয়ে ওঠেন একজন তারকা অভিনেত্রী।
সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন হেপবার্ন। যুক্ত হয়েছিলেন ইউনিসেফের সঙ্গে, কাজ করেছেন শিশুদের নিয়ে।
অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড, বাফটা অ্যাওয়ার্ড, অ্যামি অ্যাওয়ার্ড, গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড, গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড সহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন হেপবার্ন।
১৯৯২ সালে আঁন্দ্রে হেপবার্নের ক্যান্সার ধরা পড়ে। অস্ত্রোপচার করার পরও ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরে। ১৯৯৩ সালের ২০ জানুয়ারি ক্যান্সারে ভুগে সুইজারল্যান্ডে নিজের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন নন্দিত এই অভিনেত্রী।
তার মৃত্যুদিনে ইচ্ছেঘুড়ির পক্ষ থেকে রইল শ্রদ্ধা।
ইচ্ছেঘুড়িতে লেখা পাঠান এই মেইলে: ichchheghuri24@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৪