ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

২০০০ কোটি টাকা পাচার: অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণে নথি প্রেরণ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২৩
২০০০ কোটি টাকা পাচার: অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণে নথি প্রেরণ  ফাইল ফটো

ঢাকা: ২০০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ফরিদপুরের বহুল আলোচিত দুই ভাইসহ ৪৭ জনের নামে দেওয়া সম্পূরক অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য মামলাটি এখতিয়ার সম্পন্ন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।  

বুধবার (৫ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মামলার নথিটি সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন।

 

এ আদালতই চার্জশুনানিকালে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী গত ২২ জুন মোট ৪৭ জনকে অভিযুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা-সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন।

যেখানে শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ১০ জনের সঙ্গে অধিকতর তদন্তে আরও ৩৭ জনের নাম এসেছে।  

এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।

এদিন আদালতে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। তবে এ আদালতের অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণের এখতিয়ার না থাকায় মামলার নথি তিনি এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত হিসেবে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন।  

আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।  

এদিকে মামলার শুনানি উপলক্ষে আদালতে আনা হলে বুধবার সকালে আদালতের হাজতখানায় অসুস্থ হয়ে পড়েন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার কথা জানান হাজতখানার ইনচার্জ সাদিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, এদিন সকাল ৯টায় কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে অন্য আসামিদের সঙ্গে এ মামলার আসামি বাবর ও এএইচএম ফুয়াদকে আদালত চত্বরে আনা হয়। এরপর তাদের আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এর কিছুক্ষণ পর তিনি (বাবর) অসুস্থ হয়ে পড়েন।  প্রথমে তাকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে পুলিশ পাহারায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে আদেশ দেন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। এরপর মামলাটি বদলি হয়ে বিশেষ জজ আদালত-৯ এ আসে। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর চার্জশুনানির দিনে চার্জশিটে কিছু অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে সে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে আদেশ দেন।

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরে এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। এছাড়া, মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন তারা। ২৩টি বাস, ট্রাকসহ বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হয়েছেন ওই দুই ভাই। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন তারা। রাজবাড়ীতে ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর এক আইনজীবী খুন হন। সে হত্যা মামলার আসামি ছিলেন বরকত ও রুবেল।

এজাহারে আরও বলা হয়, ২০২০ সালের ১৮ জুন মিরাজ আল মাহমুদ তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, বরকত ও রুবেল অন্তত ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২৩
কেআই/জেএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।