ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মারতে গিয়ে সঙ্গীর হাতে খুন হন বিএনপি নেতা, ৪ জনের কারাদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৩
মারতে গিয়ে সঙ্গীর হাতে খুন হন বিএনপি নেতা, ৪ জনের কারাদণ্ড

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে চাঁদা না দেওয়ায় প্রতিপক্ষকে হত্যা করতে গিয়ে সঙ্গীর ছুরিকাঘাতে ইকবাল (২০) নামে এক বিএনপি নেতা খুন হওয়ার ঘটনায় তার চার সহযোগীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

এর মধ্যে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং বাকি দুই সঙ্গীকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় দেন।  

যাবজ্জীবন সাজার আদেশপ্রাপ্তরা হলেন- কাজিপুর উপজেলার মাজনাবাড়ী গ্রামের সোহরাব শেখের ছেলে মজনু মিয়া ওরফে মজনু ও আমজাদ হোসেনের ছেলে লাল বাবু। এদের মধ্যে লাল বাবু ভিকটিম ইকবালের ভাই। ১০ বছর সাজাপ্রাপ্তরা হলেন একই এলাকার বছির শেখের ছেলে  রবিউল ও চিকাছলির ছেলে রেজাব ওরফে পাইত্যা।  

সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরে কাজিপুর উপজেলার মাজনাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাদ ঢালাইয়ের সময় বিএনপি নেতা ইকবালের নেতৃত্বে দণ্ডপ্রাপ্তরাসহ সাত/আটজন ঠিকাদার হারুন অর রশিদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় তারা ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ করে দেন। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের ভাই শফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে ইকবাল তার সঙ্গীদের নিয়ে চলে যান। পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর মাজনাবাড়ী এলাকার একটি দর্জির দোকানে শফিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালান ইকবাল ও তার সহযোগীরা। এসময় মজনু মিয়া শফিকুলকে ডেগার দিয়ে  একাধিক আঘাত করে জখম করেন। পঞ্চম আঘাতের সময় শফিকুল খানিকটা সরে যাওয়ায় ডেগারটি পাশে থাকা ইকবালের বুকের ডান পাশে লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।  

এ ঘটনায় ইকবালের ভাই লাল বাবু বাদী হয়ে কাজিপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকালে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজেই বাদী হয়ে নিহত ইকবালের ভাই লাল বাবুসহ তার সহযোগীদের নামে মামলা দায়ের করেন।

রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণের জন্য মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। শুনানি শেষে হত্যার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সোমবার দুপুরে ইকবালের সঙ্গী মজনুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন আদালত।  

অপরদিকে শফিকুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশে ছুরিকাঘাত করায় মজনু মিয়া ও নিহত ইকবালের ভাই লাল বাবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভিকটিম শফিকুল ইসলামকে মারপিটে সহযোগিতার দায়ে রবিউল ও মো. রেজাবকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মজনু ও রেজাব পলাতক। বাকিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।