ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ডিএজি এমরানের অন্য উদ্দেশ্য আছে: অ্যাটর্নি জেনারেল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
ডিএজি এমরানের অন্য উদ্দেশ্য আছে: অ্যাটর্নি জেনারেল ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিশ্বনেতাদের বিবৃতির প্রতিবাদে কোনো পাল্টা বিবৃতি তৈরি করা হয়নি এবং আইন কর্মকর্তাদের সই করতেও বলা হয়নি। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

 

তার মতে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যায় এমন বিবৃতিতে সই করতে অস্বীকৃতি জানানো ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহমেদ ভূঁইয়ার অন্য কোনো উদ্দেশ্যে আছে।

এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।

এর আগে সোমবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, অধ্যাপক ড. ইউনূসের পক্ষে ১৬০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন যে— তাকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। সেটির বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে। নোটিশ দেওয়া হয়েছে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে সেই বিবৃতিতে সই করার জন্য। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই বিবৃতিতে আমি সই করব না।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল সে দেশে যে আইন সংস্কার হচ্ছে, বিচার সম্পর্কিত, তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বিবৃতিতে সই না করার চিন্তাটাও সে রকমই।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, যে বিবৃতি দিয়েছেন ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, আমি তাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত। আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।

মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি তাকে সই করতে বলিনি। আমি কোনো আইন কর্মকর্তাকে বলি না যে, আপনি এটা বা ওটাতে সই করেন। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আমাদের অফিস থেকে কোনো বিবৃতি তৈরি হয়নি।

তিনি বলেন, আমি নিজে প্রথম দিনই বলে দিয়েছি তারা (বিশ্বনেতারা) যে বিবৃতি দিয়েছেন, তা সঠিক হয়নি। কারণ তারা তথ্যটা জানতেন না। আমাদের সর্বোচ্চ আদালতে দুবার ড. ইউনূসের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তারপর ওখানে (শ্রম আদালতে) শুনানি করতে হবে। সর্বোচ্চ আদালত যদি বলেন, শুনানি করতে হবে, তখন প্রশাসনিক আদেশে এটি কি প্রত্যাহার করা যায়?

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, যারা বিবৃতি দিয়েছেন তারা এটি জানতেন না।

তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল এটি বলার পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের সই করার দরকার আছে? প্রয়োজন আছে? অ্যাটর্নি জেনারেল বলা মানে এ অফিস বলা। তাকে তো বলতে বলা হয়নি। আমি বলিনি। আমার অফিস থেকে এটি (পাল্টা বিবৃতি) প্রস্তুত করার কোনো প্রশ্নই আসেই না।

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, তার যদি মনে হয়, কেউ তাকে সই করতে বলেছেন, তাহলে তিনি তো আমার কাছে জানতে পারতেন যে, আমি এটি বলেছি কি না। তিনি তো সেটা জানতে চাননি। আমাকে জিজ্ঞেস না করে কীভাবে জানলেন এটি অফিস থেকে বলা হয়েছে? 

তিনি বলেন, গতকাল তার ছুটি ছিল। তিনি স্যুট-টাই পরে কার্যালয়ে আসেননি, সাংবাদিকদের সঙ্গে যেখানে রেগুলার ব্রিফিং করা হয়, সেখানে গিয়েছেন। সেখানে কতগুলো কথা বললেন। তিনি কী কারণে বললেন? কোন উদ্দেশ্যে বললেন? দেখুন, আপনারা খুঁজে দেখুন, কাকে খুশি করার জন্য এই কথাগুলো বললেন।

এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল পাল্টা প্রশ্ন করে সাংবাদিকদের বলেন, আমার কোনো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে? আমি নিজে করি হোয়াটসঅ্যাপ? উনি তো আমাকে বলতে পারতেন। আমি তো বললাম, তার অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে। আপনারা খোঁজ নেন। নিশ্চিতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তিনি এটি করেছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ডিএজি এমরানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না, এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ নই। আমি তো নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ নই।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
ইএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।