ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হলমার্ক কেলেঙ্কারি: তানভীর-জেসমিনসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪
হলমার্ক কেলেঙ্কারি: তানভীর-জেসমিনসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন

ঢাকা: হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের করা এক মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ এবং তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামসহ নয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম এ রায় দেন।

 

দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় তাদের এ দণ্ড দেওয়া হয়। একই ধারায় তাদের পাঁচ কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।  

এছাড়া তাদের দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় সাত বছর কারাদণ্ড ও ২৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।  

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহম্মেদ, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি আব্দুল মালেক ও টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান। যাবজ্জীবন দণ্ডের পাশাপাশি তাদের ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।  

এছাড়া প্রতারণার আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি দুই লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

মামলায় সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ সাত কর্মকর্তাকে পৃথক অভিযোগে ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, সাবেক জিএম ননী গোপাল নাথ, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জিএম মীর মহিদুর রহমান, ডিএমডি মাইনুল হক, উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ, এজিএম কামরুল হাসান খান ও সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেছা মেরীকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আর প্রতারণার আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকারকে এক ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আরেক ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ মামলায় প্রথম দফায় রায় ঘোষণার জন্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য ছিল। তবে সেদিন মামলাটি রায় থেকে উত্তোলনপূর্বক ফের দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণের আবেদন করেন দুদকের কৌঁসুলি মীর আহমেদ আলী সালাম। সেই আবেদন মঞ্জুর করে ৪ মার্চ দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন রাখা হয়। সেদিন সাক্ষ্য দেন তৎকালীন দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান ও কেশব রায় চৌধুরী। এরপর পুনরায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ১২ মার্চ দিন ধার্য করা হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ১৯ মার্চ ফের রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।

২০১২ সালের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার এবং পাচারের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ভুয়া ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের হিসাবে সুতা রপ্তানির নামে ৫২৫ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের সুতা রপ্তানি করা হয় বলে নথিপত্রে দেখানো হয়। ওই হিসাবে পুরো অর্থ জমা করা হলে তা থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হলমার্কের আরেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল এন্টারপ্রাইজের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়, যা পরে তানভির ও তার স্ত্রী তুলে নেন।

চার্জশিট দাখিলের পর ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। পরবর্তী বিচারের জন্য মামলাটি হয়ে এ আদালতে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪, আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা
কেআই/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।