ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

খুলনার বিশেষ পিপি এক মাস আইন পেশায় থাকতে পারবেন না: হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৪
খুলনার বিশেষ পিপি এক মাস আইন পেশায় থাকতে পারবেন না: হাইকোর্ট

ঢাকা: এজলাসে স্বাভাবিক বিচারকাজে বাধাগ্রস্ত করা এবং স্যোশাল মিডিয়ায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামকে নিয়ে ন্যক্কারজনক অপপ্রচার ও হেয়প্রতিপন্ন করার অভিযোগের ঘটনায় খুলনার বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জহিরুল ইসলাম পলাশকে এক মাসের জন্য আইন পেশা পরিচালনা থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তলবে হাজিরের পর মঙ্গলবার (৭ মে) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এছাড়া পরবর্তী শুনানির জন্য ১০ জুন দিন রেখেছেন। আদালতে জহিরুল ইসলাম পলাশের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

২৫ মার্চ একটি মামলার শুনানির সময় এজলাসে আইনজীবী জহিরুল ইসলাম পলাশ উচ্চস্বরে বলে উঠেন, ‘এভাবে একটি মামলা শুনানি হলে অন্য মামলা কখন শুনানি হবে? তখন বিচারক বলেন, আপনার মামলা আগে ডাকা হয়েছিল আপনি আসেননি। যেহেতু কোর্টের কর্মঘণ্টা শেষ হয়নি তাই আপনার শুনানির সময় শেষ হয়নি। তখন জহিরুল ইসলাম উচ্চস্বরে দাম্ভিকতাপূর্ণ আচরণ করেন। এক পর্যায়ে আইনজীবী তমাল কান্তি ঘোষ তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে জহিরুল ইসলাম পলাশ সরি পলাশ সরি বললে বিষয়টি সেখানে মিটে যায়।  

পরবর্তীতে পেশকার তার মামলা ডাকার পর ইতোমধ্যে বাগ-বিতণ্ডা হওয়ায় বিচারক ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলাটি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বরাবরে পাঠানোর কথা বলেন। তখন জহিরুল ইসলাম পলাশ বিচারকের ব্যক্তিগত, পারিবারিক জীবন এবং উচ্চস্বরে বিভিন্ন কথা বলে এজলাস ত্যাগ করেন। পরে ফেসবুক লাইভে এসে জহিরুল ইসলাম পলাশ ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেন। এতে বিচারককে দুর্নীতিবাজসহ আরো অনেক বিষয়ে মিথ্যা বানোয়াট এবং সম্মানহানিকর বক্তব্য দেন। এই কার‌্যকলাপের জন্য ২৭ মার্চ জহিরুল ইসলাম পলাশকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। ২৮ মার্চ জবাব দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন জহিরুল ইসলাম। কিন্তু স্যোশাল মিডিয়ায় দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি।

এমন অভিযোগ করে ৩১ মার্চ প্রধান বিচারপতি বরবার ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন বিচারক তরিকুল ইসলাম। পরে প্রধান বিচারপতি বিষয়টি হাইকোর্ট বিভাগে উপস্থাপনের জন্য ব্যবস্থা নিতে রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বলেন। এরপর বিষয়টি আদালতে উপস্থাপিত হওয়ার পর ৩ এপ্রিল আদেশ দেন হাইকোর্ট।    

স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশে আদালত অবমাননার জারি করে হাইকোর্ট ৭ মে খুলনার নারী ও শিশু নির‌্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশষে পাবলিক প্রসিকিউটর পলাশকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যখ্যা দিতে বলা বলেন। এ আদেশ অনুসারে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান জহিরুল ইসলাম। তবে আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি না নিয়ে ১০ জুন আবার হাজির থাকতে বলে এক মাস আইন পেশা পরিচালনা থেকে বিরত থাকার আদেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২৪
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।