ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘আপাতত কোটা বাতিলের পরিপত্র বহাল থাকবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৪
‘আপাতত কোটা বাতিলের পরিপত্র বহাল থাকবে’

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থার (স্ট্যাটাসকো) ফলে আপাতত কোটা বাতিল করে দেওয়া পরিপত্র বহাল থাকবে।  

বুধবার (১০ জুলাই) এ বিষয়ে আপিল বিভাগের আদেশের পর একথা জানিয়েছেন দুই শিক্ষার্থীর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

 

তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা থাকছে। এর ফলে নিয়োগ পদ্ধতিতে আপাতত কোটা পদ্ধতি প্রয়োগ হবে না। ২০১৮ সালের পর যেভাবে নিয়োগ হয়ে আসছিল, সেই পদ্ধতিই বহাল থাকবে।  

এর আগে রাষ্ট্র ও শিক্ষার্থীদের করা পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ চার সপ্তাহের জন্য এই আদেশ দেন। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।  

আজ সকাল ১০টার দিকে আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপিত হয়। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানির জন্য সাড়ে ১১টায় সময় দেওয়া হয়েছে। দুটি আবেদন একসঙ্গে শুনানি হোক। এ জন্য সময় চান। তবে আদালত সময় নামঞ্জুর করে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আবেদন শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেন।  

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, শিক্ষার্থীদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক শুনানি করেন। আর রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী শুনানি করেন।

এর আগে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভুইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান চেম্বার কোর্টের অনুমতি নিয়ে একটি সিএমপি (হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে) আবেদন করেন। ওইদিনই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে সেই আবেনের শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত।  

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এক রিটে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন কোটা পুনর্বহাল করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।  

পরে রাষ্ট্রপক্ষ রায়টি স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত গত ৯ জুন আবেদনটি শুনানির জন্য ৪ জুলাই নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। ৪ জুলাই হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়নি। তবে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্টের রায় স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ‘নট টু ডে’ (আজ শুনানি নয়) আদেশ দেন। রিট আবেদনকারী পক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।  

নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকার পরিপত্র জারি করে।  

২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা এমন পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট দায়ের করেন অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে চলতি বছরের ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী জানান, পুরো কোটা বাতিল না করে কেবল নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের কোটা বাতিল করা হয়েছিল। এটি অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এখন থেকে এসব গ্রেডে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের সন্তানদের নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই।

এরপর ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৪
কেআই/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।