ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রিভিউ শুনানি শুধু মৃত্যুদণ্ডের ওপরে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
রিভিউ শুনানি শুধু মৃত্যুদণ্ডের ওপরে

ঢাকা: প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শহীদ কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে হত্যা-গণহত্যার দায় (১১ নম্বর অভিযোগ) প্রমাণিত হওয়ায় চূড়ান্ত রায়ে জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড হয়। এ রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা রিভিউ আবেদনে কেবল ওই অভিযোগটি নিয়ে শুনানি করবেন তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

বুধবার (২৪ আগস্ট) সকাল পৌনে দশটায় রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে শুনানি চলছে। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

এর আগে শুনানি পেছাতে তিন সপ্তাহের সময়ের আবেদন জানিয়ে সকাল সাড়ে নয়টার পর আবেদনটির পক্ষে কথা বলেন খন্দকার মাহবুব। মীর কাসেম আলীর ছেলের কাছে মামলার সব কাগজপত্র আছে উল্লেখ করে তার হদিস না পাওয়ার কথা বলেন তিনি। এজন্য আসামিপক্ষের সময়ের প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন খন্দকার মাহবুব।     

এ সময় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি যে যুক্তিতে সময় চেয়েছেন, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমার ব্রাদার বিচারপতি এখানে আছেন। তিনি সময় নির্ধারণ করেছেন। আপনি এরপর ৬ সপ্তাহ সময় পেয়েছেন। এর মধ্যে ২৫ জুলাই আপনি সময়ের আবেদন করেছেন। আমরা সময় দিয়েছি। অথচ রিভিউয়ের পক্ষে কোনো আইন নাই। এরপরও আমরা সেই সুযোগ দিয়েছি। যদিও এখানে কনস্টিটিউশনাল বেরিয়ার (বাধা) রয়েছে। আপনি জানেন, রিভিউতে যুক্তি খুবই কম থাকে। আমরা দুঃখিত’।

তখন খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘আমার কাছে কিছুই নাই। কাগজপত্রও নাই। এসব ছিল তার ছেলের কাছে। তাকে কেউ নিয়ে গেছে। তিনি কেবল তার ছেলেই ছিলেন না। তিনি ব্যারিস্টার, এ মামলার আইনজীবীও ছিলেন। তার কাছেই সব কাগজপত্র ছিল। আমি এ মামলার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ঠিক আছে’।

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ওইদিন আপনি আবেদন করেছেন। আমি সময় দিয়ে দিয়েছি। রাষ্ট্রপক্ষ নানা বক্তব্য দিয়েছেন। আমি বলতে গেলে তাদের বক্তব্য শুনিও নাই, সময় দিয়ে দিয়েছি’।

এরপর নিজের ‘পেপার বুক’ খন্দকার মাহবুবের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি আমার পেপার বুক দিয়ে দিচ্ছি। আপনি শুনানি শুরু করুন’।

এ সময় প্রস্তুতির জন্য খন্দকার মাহবুব অন্তত এক সপ্তাহ সময়ের আবেদন জানান।

জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনাকে আমি গত ৪০ বছর ধরে চিনি। আমি আপনাকে যথেষ্ট সম্মান করি। আশা করি, আপনি আপনার সম্মান রাখবেন। আপনি শুরু করুন, আমরা রোববার (২৮ আগস্ট) শেষ করবো’।

খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘আমি একটি অভিযোগের ওপর বক্তব্য রাখবো। যে অভিযোগে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে’।

পরে ২/৩ মিনিট শুনানির পর আদালত আগামী রোববার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে বলেন, এটা ‘আংশিক শ্রুত’ হিসাবে আগামী রোববার কার্যতালিকার শীর্ষে আসবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ০৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। রায়ে শহীদ কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে হত্যা-গণহত্যার দায়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল হোতা মীর কাসেম আলীর।

গত ০৬ জুন ২৪৪ পৃষ্ঠার পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ।

এরপর গত ১৯ জুন ৬৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। এতে ফাঁসির রায় বাতিল করে খালাস ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আরজি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে আলবদর বাহিনীর তৃতীয় এই শীর্ষনেতা।

রিভিউ আবেদনে সর্বোচ্চ সাজার বিরুদ্ধে মোট ১৪টি যুক্তি দেখানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
ইএস/এএসআর

** মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদনের শুনানি ফের রোববার
** মীর কাসেমের রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু
** ফের পেছানোর আবেদন মীর কাসেমের আইনজীবীর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।