ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নিজাম হাজারীর সংসদ সদস্য পদ বিষয়ে রায় স্থগিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৬
নিজাম হাজারীর সংসদ সদস্য পদ বিষয়ে রায় স্থগিত

ঢাকা: ফেনী-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর পদ থাকবে কি-না সে বিষয়ে রায় দেওয়া স্থগিত করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। নিজাম হাজারী কারাগারে থাকাকালে কতো ব্যাগ রক্ত দেন এবং এজন্য কতোদিনের সাজা রেয়াত পেয়েছেন তা জানতে চেয়েছেন।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) আংশিক রায় দেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদালতের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার (৩১ আগস্ট) বাকি রায় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন।

বুধবার রায় ঘোষণা স্থগিত করে একমাসের মধ্যে নিজাম হাজারীর স্বেচ্ছায় রক্তদানের তথ্য চেয়েছেন। কারা কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলেছেন, নিজাম হাজারী কারাগারে থাকাকালে কতো ব্যাগ রক্ত দেন এবং এজন্য কতোদিনের সাজা রেয়াত পেয়েছেন।

আগামী ০৩ নভেম্বর এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

‘সাজা কম খেটেই বেরিয়ে যান সাংসদ’ শিরোনামে ২০১৪ সালের ১০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়৷

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সালের ১৬ আগস্ট অস্ত্র আইনের এক মামলায় নিজাম হাজারীর ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু দুই বছর ১০ মাস কম সাজা খেটে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।

পরে ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে নিজাম হাজারীর সংসদ সদস্য পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া।

রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ০৮ জুন রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

গত ০৩ আগস্ট এ রুলের শুনানি শেষে ১৭ আগস্ট রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট। তবে বিচারিক আদালতের একটি নথি না আসায় রায়ের দিন পিছিয়ে ২৩ আগস্ট ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট। অস্ত্র মামলায় বিচার শুরুর আগে নিজাম হাজারী কতোদিন জেল খেটেছেন- সে বিষয়ে নথিটি না পাওয়ায় সেদিন রায় দেননি আদালত। ২৩ আগস্টের আগেই সেটি দাখিল করবেন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার এবং এর ভিত্তিতে ওইদিন রায় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

২৩ আগস্ট ওই নথিটি দাখিলের পর সেটি নিয়ে শুনানি শেষে ৩০ আগস্ট রায়ের দিন পুনর্নিধারণ করেন হাইকোর্ট।

রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬(২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুসারে, কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকে। সে হিসেবে নিজাম হাজারী ২০১৫ সালের আগে সংসদ সদস্য হতে পারেন না। অথচ তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছেন।

রুল শুনানি চলা অবস্থায় গত ২৬ মে নিজাম হাজারী কতো দিন জেল খেটেছেন তার তথ্য জানতে চান হাইকোর্ট। এ নির্দেশের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে কারা মহাপরিদর্শক একটি প্রতিবেদন পেশ করেন।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। ওই তদন্ত কমিটি নিজাম হাজারীর সাজা ও রেয়াতের হিসাব করে দেখেছে, নিজাম হাজারী সাজা রেয়াত পাওয়ার পরও পুরো সাজা খেটে মুক্তিলাভ করেননি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১০ বছরের সাজার মধ্যে তিনি সাজা খেটেছেন ৫ বছর ৮ মাস ১৯ দিন। কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাজা রেয়াত পেয়েছেন ১ বছর ৮ মাস ২৫ দিন (৬২৫ দিন)। রেয়াতসহ মোট সাজা ভোগ করেছেন ৭ বছর ৫ মাস ১৪ দিন। এখনো সাজা খাটা বাকি আছে ২ বছর ৬ মাস ১৬ দিন।

আদালতে নিজাম হাজারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শফিক আহমেদ ও আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন। রিট আবেদনের পক্ষে  ছিলেন কামরুল হক সিদ্দিকী।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।