ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘দুই মন্ত্রীর পদ হারানোর কোনো কারণ নেই’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৬
‘দুই মন্ত্রীর পদ হারানোর কোনো কারণ নেই’

ঢাকা: খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতের শপথ ভঙ্গের রায়ের পরেও তাদের মন্ত্রিত্ব হারানোর কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

 

 বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।


 
ফাঁসি কার্যকর হওয়া যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার রায়ের আগে সুপ্রিম কোর্ট ও প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য ওই দুই মন্ত্রীকে আদালত অবমাননার দায়ে গত ২৭ মার্চ ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন আপিল বিভাগ। গত ০১ সেপ্টেম্বর ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ আদালত।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, তারা আইন লঙ্ঘন এবং সংবিধান রক্ষা ও সংরক্ষণে তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন।
এরপর দুই মন্ত্রীর পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে, যেটির শুনানি হবে বৃহস্পতিবার (০৮ সেপ্টেম্বর)।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘খবরের কাগজে আমি পড়েছি, হাইকোর্ট একটি রুল দিয়েছেন, জবাব দিতে বলেছেন তাদের অবস্থান কি? এজন্য আমি খুব সাবধানে কথাটা বলতে চাই। কারণ, আমি আদালত অবমাননার মধ্যে পড়তে চাই না। তাছাড়া বিচারাধীন বিষয়ের মধ্যে পড়ে যায়’।
 
‘আপনার জানেন, এ দেশে গণতন্ত্রের বয়স খুব কম। এখানে শপথ ভঙ্গের জন্য কোনো দণ্ড নেই যে, এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। এ রকম কোনো আইনও নেই, বিধানও নেই। কোনো কনভেনশনও নেই’। আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারপতিরা রায় দিয়েছেন। রায়ে তারা আপিল বিভাগ কিন্তু বলে দেননি, পাঁচজন বিচারপতি বলে দেননি যে, শপথ ভঙ্গ হয়েছে। তারা বলে দেননি যে, শপথ ভঙ্গের কারণে মন্ত্রিত্ব নেই। বরং তারা যেটা বলেছেন, এই শপথ ভঙ্গের কারণে তারা যে ক্ষমা চেয়েছিলেন, তা না করে শাস্তি দিচ্ছি’।

‘তিনজন বিচারপতি শপথ ভঙ্গের ব্যাপারে ঐকমত্য প্রকাশ করেননি। তারা পরিস্কার বলেছেন, যখন তাদের বিচার করা হচ্ছে- তখন এ ইস্যুটা সামনে আসেনি। এ ইস্যু নিয়ে কোনো রুল জারি করা হয়নি। যেহেতু রুল জারি করা হয়নি, সেহেতু বিবেচনায় আনাই আইনসম্মত না। তাদেরকে জবাব দেওয়ার অধিকার আমরা দেইনি। যদি রুল জারি করা হতো, তাহলে তারা জবাব দিতে পারতেন’।
 
‘এই বিচারকরা অনেক উদাহরণ দেখিয়েছেন’।  
 
আইনমন্ত্রী একজন বিচারকের উদাহরণ টেনে বলেন, বিচার বিভাগ লর্ড ডেনিমের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ইউনাইটেড কিংডমের একজন বিজ্ঞ বিচারক অথবা লর্ড ডেনিমকে একজন লিখেছিলেন- তোমাকে একটি গালি দেওয়া হলো। তুমি কনটেমপ্ট করতে পারতে, করলে না কেনো? তখন ওই বিচারপতি বললেন, তার বলার অধিকার আছে। আর সেটা আমি শুনলাম কি শুনলাম না, আমার কাজ যেটা সেটা আমি করে যাই। আমি একজন বিচারপতি, আমাকে ব্যক্তিগতভাবে গালি দেওয়া হলে, তা গ্রহণ করে ওপরের দিকে দেখতে পারি, নিচের দিকে না দেখে। তাহলে বিচারকেরই ভালো হয়। তাতে বিচারপতিদের মহানুভবতা প্রকাশ পায়’।
 
আইনমন্ত্রী জানান, ‘জাজমেন্টের মধ্যেই এ উদাহরণ আছে। তারা বলেছেন, শপথ ভঙ্গের ব্যাপারে আমরা কনসিডার করতে পারি না’।
 
আইনমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, এমপিদের ডিসকোয়ালিফিকেশন সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে। সেখানে কিন্তু সেই ডিসকোয়ালিফিকেশনের মধ্যে মন্ত্রীরা পড়েন না, এই সাজার পরেও। সেহেতু আমার মনে হয়, কনটেমপ্ট না হয়, সেই আবেদনেই বলছি, তাদের মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ বা পদ হারানোর কোনো প্রয়োজন নেই, কারণ নেই’।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৬ আপডেট:১৬২৪ ঘণ্টা,
এসএমএ/এএটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।