ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

টাওয়ারের রেডিয়েশন, তিন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৭
টাওয়ারের রেডিয়েশন, তিন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ

ঢাকা: বাংলাদেশে মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ারের রেডিয়েশনের মাত্রা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি নির্ণয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থার বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের জন্য যোগাযোগ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

অন্য দু’টি সংস্থা হচ্ছে- আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এবং ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন নন-আইওনাইজিং রেডিয়েশন প্রটেকশন।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এসব সংস্থার প্রতিবেদন নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি প্রতিবেদন আকারে আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

এছাড়াও রেডিয়েশনের বিষয়ে ২০১৩ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদনে সুপারিশ করা ‘বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নীতিমালা’ বাস্তবায়নে বিটিআরসি’র পদক্ষেপও একই সময়ের মধ্যে জানাতে হবে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। বিটিআরসি’র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক।

মোবাইল ফোন টাওয়ারের রেডিয়েশন নিঃসরণ নিয়ে ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।  
 
ওই সময় রেডিয়েশনের মাত্রা এবং এর স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কয়েকটি মোবাইল ফোন টাওয়ার পরিদর্শন করে রেডিয়েশন বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলেন।

এছাড়াও সাতদিনের মধ্যে বিশেষজ্ঞ কমিটি করতে স্বাস্থ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কমিটি করে নিরীক্ষা করে স্বাস্থ্যের ক্ষতির বিষয়টি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে বিটিআরসিকে রেডিয়েশনের মাত্রা কমাতে বলে।

বিষয়টি গত ২২ মার্চ শুনানিতে আসার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান রাষ্ট্রপক্ষ। যাতে রেডিয়েশনের উচ্চমাত্রার কথা বলা হয়। ওইদিন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দিয়ে রেডিয়েশনের মাত্রা নির্ণয় চেয়ে আবেদন জানান আবেদনকারীপক্ষ।

আবেদনটি মঙ্গলবার গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনটি হলফনামা আকারে জমা দেন রাষ্ট্রপক্ষ।  

এরপর আদালত বলেন, ‘চার বছর আগের প্রতিবেদন। সেটি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেই। এমন জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট একটি বিষয় বাস্তবায়নে এতোদিনেও কিছু হয়নি’।  

এ সময় আদালত বিটিআরসি’র আইনজীবীর কাছে তাদের পদক্ষেপ জানতে চান। জবাবে আইনজীবী বলেন, ‘বিটিআরসি একটি গাইডলাইন (নীতিমালা) করছে, যার খসড়া হয়েছে। মঙ্গলবারই কমিশনের সভায় বিষয়টি উঠবে বলে জানি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই হয়ে যাবে আশা করি’।

আদেশের পর মনজিল মোরসেদ বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুসারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় গত সপ্তাহে সম্পূরক আবেদন করা হয়েছিল। ওই আবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি কমিশন ও ইন্টারনেশনাল কমিশন অন নন-আইওনাইজিং রেডিয়েশন প্রটেকশনের কাছ থেকে দেশের মোবাইল টাওয়ারে বিকিরণে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কি-না, সে বিষয়ে মূল্যায়ন প্রতিবেদন সংগ্রহের আরজি জানানো হয়। আদালত শুনানি নিয়ে সে আবেদন গ্রহণ করেছেন’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।