ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের থাকার পক্ষে আজমালুল কিউসি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০২ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের থাকার পক্ষে আজমালুল কিউসি

ঢাকা: বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দিয়ে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বৈধ বলে মত দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি।

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ম দিনের আপিল  শুনানিতে মঙ্গলবার (৩০ মে) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চে অ্যামিকাস কিউরির (আদালতকে আইনি সহায়তাকারী) বক্তব্যে এমন মতামত উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি।

পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “ষোড়শ সংশোধনী বৈধ, এটা সংসদের এখতিয়ারের মধ্যে।

সেজন্য এখানে কোনো ভুল ত্রুটি নাই। আর এটাকে স্ট্রাইকডাউন (বাতিল) করতে পারবে না। ”

“ওনারা (বিচারক) জনগণের হয়ে বিচার কাজ করছেন। জনগণের পক্ষে যখন বিচারকাজ করছেন, ওনাদের ওপরও জবাবদিহিতার প্রয়োজন আছে। জবাবদিহিতার জন্য সংসদে যারা নির্বাচিত সংসদ সদস্য, জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন তাদের কাছে জবাবদিহিতা থাকার প্রয়োজন আছে। এটাই হলো আমার মূল উদ্দেশ্য। এই ষোড়শ সংশোধনী ওই জায়গাতেই নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে সংসদের কাছে জবাবদিহিতা থাকবে। ”

বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেওয়া স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর আঘাত কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে আজমালুল হোসেন কিউসি বলেন, “এখানে স্বাধীন বিচার বিভাগের কোনো সমস্যা নাই। আমাদের সংবিধানের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা যেটা আছে সেটা লিমিটেড, অ্যাবস্যুলেট না। যদি রাষ্ট্রপতিকে ইম্পিচমেন্ট (অপসারণ) করতে হয়, সেটা কিন্তু সংসদে হবে। সংসদ তো এখানে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে গিয়ে বিচার করলো। তেমনিভাবে একজন জজকেও যদি অপসারণ করতে হয়। একই জিনিস করবে। সংসদেরও কিছু কিছু বিচার করার কাজ আছে। ”

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়।

সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ০৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ০৯ নভেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এ রুলের শুনানি শেষে গত বছরের ০৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।

এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেন।

গত ০৮ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত আপিল শুনানির ৬ কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন করেন আপিল আবেদনের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নিজেনারেল মুরাদ রেজা এবং রিট আবেদনের পক্ষে মনজিল মোরসেদ। শুরুতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় পড়ে শোনান মুরাদ রেজা।

এরপর চার কার্যদিবস অ্যামিকাস কিউরিরা তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। আগামী বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কোনো বক্তব্য থাকলে তা উপস্থাপন করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৯
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।