ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আইনজীবী পলাশের মৃত্যু: বিচারিক তদন্তের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৯
আইনজীবী পলাশের মৃত্যু: বিচারিক তদন্তের নির্দেশ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: কারা হেফাজতে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর হাসপাতালে আইনজীবী পলাশ কুমার রায়ের (৩৬) মৃত্যুর ঘটনায় পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে বিচারিক তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ তদন্ত কাজে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক, জেলা কারাগারের প্রধান ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (০৮ মে) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

রুলে কারাগারে কারাবন্দিকে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।  

এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আদালত ২৩ জুন দিন ঠিক করেছেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেছুর রহমান। রিটকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন নিজেই শুনানি করেন।

আদেশের পরে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, পঞ্চগড়ের সন্তান (পলাশ) ঢাকা বারের একজন অ্যাডভোকেট। উনি মানহানির মামলায় পঞ্চগড় জেলা কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাকালে গত ২৬ তারিখে (এপ্রিল) ওনাকে কে বা কারা শরীরে পেট্রোল বা কেরোসিন জাতীয় পদার্থ দিয়ে আগুন লাগিয়ে আহত করে। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। আমি বাদী হয়ে হাইকোর্টে এ ঘটনায় রিট করি।

‘জেলা কারাগারে এই যে ব্যর্থতা তাকে সিকিউরিটি দিতে এটা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এ ব্যাপারে রুল দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে বলে দিয়েছেন পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর তত্ত্বাবধানে আরেকজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিবেন বিচারিক তদন্তের জন্য এবং ডিসি, কারাগারের সুপার এবং এসপি ওনারা তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন তদন্তের ব্যাপারে। ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদনটা আদালতে জমা দিবেন। ’    

সায়েদুল হক সুমন আরও বলেন, ‘আদালত এ কথা বলেছেন এ ছেলেটা যদি কোনো কারণে এই যে অভিযোগ, হত্যা করা না হয়ে থাকে, সে যদি সুসাইডও করে থাকে, তাও এটা বের হয়ে আসা দরকার যে, আগুনে জ্বলার মতো পদার্থ কই পেলো কিভাবে আগুন দিলো এ ব্যাপারটা সামনে আসা জরুরি। ’

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সোমবার (৬ মে) রিট করেন।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত আইনজীবী পলাশ জেলার আটোয়ারী উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বড়সিংগিয়া গ্রামের প্রণব কুমার রায়ের ছেলে।

জানা যায়, তার বিরুদ্ধে একটি প্রতিষ্ঠানের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২৫ মার্চ দুপুরে মানববন্ধন করার সময় প্রধানমন্ত্রীর নামে পলাশ কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। রাজীব রানা নামে এক তরুণ তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন।  

তাকে আটক করে ২৬ মার্চ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ২৬ এপ্রিল কারা হাসপাতালের বাথরুমে অগ্নিকাণ্ডের শিকার হন তিনি। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে চিকিত্সাধীন অবস্থায় পলাশ মারা যান।

রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজি (প্রিজন), রংপুর বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন) ও পঞ্চগড় কারাগারের জেলার।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৯
ইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।