ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

শিশুদের মধ্যে শেখার অক্ষমতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২৩
শিশুদের মধ্যে শেখার অক্ষমতা সংগৃহীত ছবি।

আরিয়ান চলনে ও বলনে, আচরণে আর ১০টা শিশুর মতোই। কিন্তু তার বাবা-মা স্কুলে ভর্তি করানোর পর দেখতে পেলেন সে একই বয়সের অন্য শিশুদের মতো তাড়াতাড়ি কিছু শিখতে পারছে না।



ক্লাসে ব্ল্যাকবোর্ড থেকে কিছু টুকে নিতে তার সমস্যা হচ্ছে। সাধারণ অংক করতে হিমশিম খাচ্ছে সে। খুব সাধারণ শব্দ বানান করে লিখতে পারছে না অথবা ভুল করছে সে।

তার বাবা-মা ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে তারা কেবল হতাশাজনক কথা শুনতে শুনতে নিজেরাই হতাশায় ভুগছেন।

সারা পৃথিবীতে আরিয়ানের মতো সমস্যায় রয়েছে অগণিত শিশু। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে আমরা শেখার অক্ষমতা (লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি) বলে থাকি। যখন কোনো শিশু তার সমবয়সী অন্য শিশুদের তুলনায় শেখার ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে অনেক পিছিয়ে থাকে তখন সে লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটিতে ভুগছে বলে আমরা ধরে নেই। তবে এ ধরনের অক্ষমতা খুব সামান্য মাত্রা থেকে শুরু করে মারাত্মক লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি পর্যন্ত যেকোনো মাত্রায় শিশুর মধ্যে উপস্থিত থাকতে পারে।

লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটিতে শিশুর নিম্নোক্ত বিষয়ে সমস্যা থাকতে পারে:

মনোযোগ দিয়ে কিছু শোনা
চিন্তা করে কথা বলা
পড়তে পারা, লেখা ও বানান করা
যুক্তি দিয়ে কাজ করা বা কিছু বোঝানো
অংক করা, সূক্ষ্ম কাজ করা, ইত্যাদি

কেন হয়?

লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি কেন শিশুদের মধ্যে আসে তার সঠিক কারণ প্রতিটি শিশুর জন্য ভিন্ন হতে পারে। কারও বংশগতভাবে এটা আসে, আবার কারও জন্মের সময় কোনো সমস্যা যেমন সময়ের আগে জন্ম নেওয়া, কম ওজনের শিশু জন্ম নেওয়া, জন্মের সময় অক্সিজেনের অভাব হলে, জন্ম নিতে দীর্ঘ সময় লাগলে শিশু পরবর্তীতে লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটিতে ভুগতে পারে।

জন্মের পরেও অপুষ্টি, মাথায় আঘাত, কঠিন কোনো অসুখ, টক্সিক মেটাল যেমন লেডের প্রভাবে (বাতাস থেকে অথবা খাবারের সাথে) শিশুর মধ্যে লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি আসতে পারে।

সমাধান কী?

অনেক লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটিতে ভোগা শিশু সঠিক পরিচর্যা না পেয়ে লেখাপড়ায় ভালো করতে পারে না। সবসময় তার শিখতে না পারার জন্য বাবা ও মা, শিক্ষক ও আত্মীয় পরিজন শিশুটিকেই দায়ী করেন। এর ফলে শিশু আরও বেশি হীনমন্যতায় ভোগে। এ ধরনের অনেক শিশুই আর লেখাপড়া শেষ করতে পারে না। এ ধরনের শিশুর জন্য প্রয়োজন বিশেষ পদ্ধতিতে শেখানো যেটাকে উন্নত বিশ্বে এডুকেশন থেরাপি বলে (আমাদের দেশেও চালু হয়েছে)। সেই সঙ্গে অনেক শিশুর অকুপেসনাল থেরাপি এবং সেন্সরি ইন্টিগ্রেসন থেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।

তাই শিশুর এ ধরনের সমস্যা থাকলে তাকে ভাগ্যের হাতে ফেলে না দিয়ে তার জন্য পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া আমাদের সবার কর্তব্য যাতে করে শিশুটির জীবন অর্থবহ হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১,২০২৩
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।