চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠের ২০০৯ সালের আয়োজনের বিজয়ী সোমনূর মনির কোনাল। গানের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে আসা শিল্পীদের মধ্যে কোনাল বেশ আলোচিত।
কোনাল অবশ্য নিজেকে অলরাউন্ডার মানতে নারাজ। তিনি নিজেকে শুধু গানের শিল্পীই মনে করেন। গান নিয়ে আছেন, গান নিয়েই থাকতে চান। গানের মধ্যেই খুঁজে পান নিজেকে। এ প্রসঙ্গে কোনাল বলেন, সেই ছোটবেলা থেকে গান শিখছি। চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠে বিজয়ী হয়েছি গান গেয়েই। আজকে মানুষ আমাকে যতটুকু চেনে তা কেবল গানের জন্যই। তাই সবার আগে গান তারপর অন্যকিছু। গান গাওয়া আমার নেশা আর পেশা, আর অন্যগুলো নিতান্তই শখ।
উপস্থাপনা করা প্রসঙ্গে কোনাল বলেন, আমি যে দু’একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছি তা সঙ্গীত নির্ভর। স্টেজে গান গাওয়ার সময়ও আমাদের দর্শকের সঙ্গে নানা সময় কথা বলতে হয়। ওটাও একধরণের উপস্থাপনা। আমার মনে হয়, সব গায়ক-গায়িকারই এরকম একটু-আধটু উপস্থাপনার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
অভিনয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোনাল বলেন, এটা একদমই হঠাৎ করেই হয়ে গেছে। আমি নিজেও জানতাম না সেদিন চলচ্চিত্রে অভিনয় করবো। আসলে আমি চ্যানেল আইতে অন্য একটা কাজে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করেই ‘লাল টিপ’ চলচ্চিত্রের পরিচালক স্বপন আহমেদ আমাকে অভিনয়ের প্রস্তাব করলেন। আমি প্রথমে না করেছিলাম, তবে শেষ পর্যন্ত তিনি এমনভাবে বললেন, যে ছবিতে কাজ করতেই হলো।
ছবিটিতে অভিনয় প্রসঙ্গে কোনাল আরো বললেন, ‘লাল টিপ’ ছবিতে আমি একজন রেডিও জকির ভূমিকায় অভিনয় করেছি। ছবিতে ইমন এবং কুসুম শিকদার অভিনয় করেছেন। ছবিতে ইমন রেডিওর সাহায্যে তার মনের না বলা কথা সবাইকে জানাতে চায়। আর সেজন্যই সে আমার কাছে আসে। আমার এবং ইমনের অংশের শুটিংটি হয়েছে রেডিও টুডের অফিসে। এখানে আমি কোনাল নামেই অভিনয় করেছি।
ভবিষ্যতে অভিনয় চালিয়ে যাবেন কিনা জানতে চাইলে কোনাল বললেন, সেরকম সম্ভাবনা খুব একটা নেই। আমি গানেই গুরুত্ব দিতে চাই।
গতমাসে সেরাকণ্ঠের অপর দুই বিজয়ী ঝিলিক এবং মুগ্ধের সঙ্গে আমেরিকা সফর শেষ করে এলেন কোনাল। একসঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পাশাপাশি শপিং আর বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে সময়টা বেশ উপভোগ করেছেন বলে কোনাল জানালেন। দেশে ফিরেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিজের প্রথম অ্যালবামের কাজ নিয়ে। আমেরিকা যাওয়ার আগেই নিজের প্রথম একক অ্যালবামের কাজ শুরু করেছিলেন কোনাল। ফিরে এসে আবারও সেই অ্যালবামের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বেশ কয়েকটি গানের কাজ এরই মধ্যেই শেষ করেছেন। কোনালের এই একক অ্যালবামের সংগীতায়োজনের কাজ করছেন এসআই টুটুল, ফুয়াদ আল মুক্তাদির, হৃদয় খান ও পৃথ্বীরাজ। অ্যালবামটি কবে নাগাদ শ্রোতাদের হাতে আসবে জানতে চাইলে কোনাল বললেন, এখনই বলতে পারছিন না। আসলে আমি একটু আস্তে ধীরেই অ্যালবামটির কাজ করতে চাই। এমন গান করতে চাই যার মাধ্যমে মানুষ মনে রাখবে আজীবন। তবুও ইচ্ছে আছে, আগামী কোরবানীর ঈদে অ্যালবামটি বের করার।
এককের পাশাপাশি বেশ কিছু মিক্সড অ্যালবামে কাজ করার কথাও চলছে কোনালের। এর বাইরে ক্ল্যাসিকাল শেখার কাজও নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এরই মধ্যে কোনালের সঙ্গে তরুণ সঙ্গীত পরিচালক পৃথ্বীরাজের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে শোনা যাচ্ছে নানা গুঞ্জন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনাল সরাসরি বলেন, আমি পৃথ্বীরাজের কাছে হিন্দুস্তানি ক্ল্যাসিক্যাল শিখছি। পৃথ্বী ভারত থেকে হিন্দুস্তানি ক্ল্যাসিক্যালের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরেছে। আমার এবং পৃথ্বীরাজের ম্যানটালিটিটা বেশ মিলে যায়। দুজনের মধ্যে তাই একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এ নিয়ে আমি কোনো রাখ-ঢাকে যেতে চাই না। আমাদের দু’জনের পরিবার থেকেও বিষয়টি মেনে নেয়া হয়েছে। বিয়ে কবে করবো, তা অবশ্য এখনো ঠিক করা হয় নি।
বাংলাদেশ সময় ১৭৫০, আগস্ট ১৫, ২০১১