সুস্থতার জন্য আমাদের প্রয়োজন রোগমুক্তি, আর রোগ মুক্তির জন্য প্রতিনিয়তই আমরা বিভিন্ন প্রকার ওষুধ সেবন করছি। কিন্তু ওষুধ খাওয়ার আগে আমরা কি চিন্তা করি যে, কীভাবে এর প্রয়োগ করলে এটি দ্রুত এবং ফলপ্রসু প্রভাব ফেলবে আমাদের শরীরে? সবাই হয়তো বলবেন চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী তারা ওষুধ সেবন করে থাকেন।
এখন প্রশ্ন হলো চিকিৎসা বিজ্ঞান ওষুধের সেবন বিধি সম্পর্কে কোনটি সমর্থন করে। আমরা জানি আমরা যেসব ওষুধ সেবন করি তা প্রথমে আমাদের পাকস্থলীতে যায়, এরপর সেখান থেকে তা আমাদের শরীরে শোষিত হয়ে আমাদের রোগ নিরাময় করে। কিন্তু ওষুধ শোষণের মূল কাজটি হয় ক্ষুদ্রান্ত্রে, পাকস্থলীতে নয়। কারণ ক্ষুদ্রান্ত্রের শোষণতল, পাকস্থলীর শোষণতল থেকে অনেক বেশি। আমাদের প্রচলিত ধারণা ভরা পেটে ওষুধ খেলে তা ভাল কাজ করে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাকস্থলীতে খাদ্যের উপস্থিতি ওষুধের শোষণ ব্যাহত করে।
ওষুধ শোষণের পূর্বশর্ত হলো তা দ্রুত পাকস্থলী থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে পৌঁছানো। কিন্তু খাদ্যের উপস্থিতি এই প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে এবং ওষুধের কার্যকারীতা মন্থর করে দেয়।
তবে এটিও সত্যি যে কিছু কিছু ওষুধ ভরা পেটে সেবন করতে হয়। যেমন বিভিন্ন প্রকার ব্যাথার ওষুধ (আমরা যেগুলোকে ঘঝঅওউং বলি)। ব্যাথার ওষুধগুলো পাকস্থলীতে এসিডিটি ঘটায়, এজন্য ভরা পেটে এগুলো সেবন করলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আরো কিছু ওষুধ আছে যেগুলো খুবই লিপোফিলিক তা ভরা পেটে খাওয়াই উত্তম।
এইরকম কিছু ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে ভরা পেটে ওষুধ খাওয়ার কথা উল্লেখ করতে হয়, অপরদিকে বেশিরভাগ ওষুধই খাওয়ার অন্তত আধা ঘন্টা আগে খেলে তুলনামুলক ভালো ফল পাওয়া যায়। যেহেতু সেবনবিধির এই বিষয়টি ওষুধের দ্রুত কার্যকারীতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তাই সবসময় খাওয়ার আগে না পরে সেবন করতে হবে এ ব্যপারে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেয়া উচিৎ।