বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকা ববিতা এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রয়েছেন। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের জন্য তিনি ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল (ডিসিআই)-এর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা দূত (গুডউইল অ্যাম্বসেডর) নির্বাচিত হয়েছেন।
জাতিসংঘের আওতাভূক্ত দেশগুলোর মানুষদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং ব্যয় কমিয়ে তার কিছু অংশ সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের সাহায্যার্থে তহবিল সৃষ্টির কাজ করে যাচ্ছে ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যোন্টস ইন্টারন্যাশনাল (ডিসিআই)। এটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংগঠন। ডিসিআই আয়োজিত একটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণের জন্য ববিতা গত ১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যান।
নিউইয়র্কের ইয়ল ইউনিভার্সিটিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর সকালে কনফারেন্স শুরু হয়। সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ ও ববিতা’ শীর্ষক মাহফুজুর রহমান খান নির্মিত পাঁচ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘জেনেসিস অব ববিতা’ প্রদর্শিত হয়। যেখানে বাংলাদেশ-এর অবস্থান, এই দেশের বিভিন্ন তথ্য এবং ববিতা সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়। যাতে করে সম্মেলনে যোগ দেওয়া অতিথিরা বুঝে নিতে পারেন ববিতা কে এবং তিনি কেনই বা শুভেচ্ছা দূত নির্বাচিত হয়েছেন। ‘জেনেসিস অব ববিতা’ প্রদর্শনের পরপরই সকাল সাড়ে ১১টায় সম্মেলনে ববিতা বক্তব্য রাখেন।
ববিতা তার বক্তব্যে বাংলাদেশের অধিকার বঞ্চিত অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর প্রতি আহবান জানান। ববিতা বলেন, বাংলাদেশে বহু শিশু আছে যারা তিন বেলা খেতে পায় না, স্কুলে যেতে পারেনা। তাদের জন্যই কাজ করতে এসেছি। ববিতা তার নিজের বাকী জীবন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য উৎসর্গ করারও ঘোষণা দেন তিনি। ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যোন্টস ইন্টারন্যাশনানের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এই সম্মেলনে বক্তৃতায় ববিতা আরো বলেন, মানবতাই হলো সবচেয়ে বড় শিল্প। অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর মতো ভালো কাজ আর কিছু হতে পারেনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে আমি বঞ্চিত শিশুদের সহযোগিতার জন্য জনমত গড়ে তুলতে সারা পৃথিবীতে যেতে চাই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসী বাঙ্গালীদের সাথেও আমি এ বিষয়ে কথা বলবে। শিশুশ্রম বিহীন একটি বিশ্ব গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহবান জানিয়ে ববিতা বলেন, জীবিকার জন্য যেসব শিশু স্কুলে না গিয়ে কাজ করছে তাদেরকে কর্মস্থল থেকে ফিরিয়ে এনে স্বাধীনভাবে ক্লাসে বসার সুযোগ তৈরি করে দেবার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার শতাধিক দেশের বিভিন্ন সংগঠন ও বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। এরই মধ্যে শিকাগোতেও একটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন ববিতা। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি ডালাসে একটি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। এরপর একে একে তিনি আটলান্টা, মেরিল্যান্ড, টরেন্টো, মিশিগানেও এই শিশু বিষয়ক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।
ববিতা বর্তমানে বাংলাদেশের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য তহবিল গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছেন। ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল (ডিসিসিআই) শিশুদের জন্য এই ববিতার এই কাজ করে যাওয়ার নামকরণ করা হয়েছে ‘A Journey for Child Rights and Sight with Babita’। আগামী ১৮ অক্টোবর ববিতা দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
বাংলাদেশ সময় ১৭২৫, সেপ্টেম্বর ১৭,২০১১