ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বন্ধ্যাত্ব এবং এর কারণগুলো

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০
বন্ধ্যাত্ব এবং এর কারণগুলো

দুই বছর বা এর অধিক সময় কোন ধরণের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে তাকে ডাক্তারি ভাষায় বন্ধ্যাত্ব হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। প্রতি ১০০টি দম্পতির মধ্যে ৮৪টি প্রথম বছরে এবং ৯২টি দম্পতি দ্বিতীয় বছরের মধ্যে গর্ভধারণ করতে সমর্থ হন। তাই বলা যায়, প্রতি ১০০টি দম্পতির মধ্যে ৮টি দম্পতি বন্ধ্যাত্বের শিকার হন।

বন্ধ্যাত্ব ও এর কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন চট্টগ্রামের ইমপেরিয়াল হাসপাতালের এসোসিয়েট কনসালট্যান্ট (অবস-গাইনি) ডা. নুসরাত জাহান।

কখন কনসিভ না হওয়ার কারণ নির্ণয় করা দরকার?

এক বছর বা এর অধিক সময় কোন ধরণের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

তবে কারো কারো ক্ষেত্রে কনসিভ না হওয়ার কারণ নির্ণয় করতে দেরি করা যাবে না। যেমন,
- বয়স ৩৬ বা এর বেশি হলে
- রোগীর পূর্বে এমন কোন হিস্ট্রি থাকলে যেগুলো তার বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে; যেমন, পেলভিক ইনফেকশন এর হিস্ট্রি, অথবা
- এমন কোন অপারেশন যা তার ফার্টিলিটি কমিয়ে দিতে পারে।

বন্ধ্যাত্বের কারণসমূহ:
বন্ধ্যাত্বের বহুবিধ কারণ থাকে, স্বামী-স্ত্রী যেকোন একজন বা উভয়ের ক্ষেত্রে সমস্যা থাকতে পারে। গর্ভধারনের জন্য দরকার একটি সুস্থ্ ওভাম (ডিম), সবল বীর্য, নরমাল ইউটেরাস বা জরায়ু এবং নরমাল পেলভিক এ্যানাটমি। এর যেকোন জায়গায় সমস্যা হলে গর্ভধারণে ব্যর্থতা দেখা দিতে পারে।  

প্রাথমিকভাবে বন্ধাত্ব্যের কারণকে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এগুলো হচ্ছে- 
১। এনুভলেশন (ডিম্বাশয় থেকে ওভাম বা ডিম নিঃসরণ না হওয়া), 
২। জরায়ু বা ডিম্বনালীর সমস্যা এবং 
৩। পুরুষ সঙ্গীর সমস্যা।

ওভুলেসন বা ডিম্বস্ফুটন না হওয়ার কিছু কারণ:
• পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম
• হরমোনের অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণ। কিছু কিছু হরমোন যেমন প্রলেক্টিন, থাইরয়েড হরমোন অথবা পিটুইটারি FSH, LH হরমোনের অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণ ওভুলেশন ব্যাহত করে।  
• শরীরের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী বা কম থাকা।
• প্রিমেচিউর ওভারিয়ান ফেইলিউর
• অতিরিক্ত মানসিক চাপ।
• অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ক্যান্সার কিংবা কিডনি রোগেও ওভুলেশন ব্যাহত হতে পারে।
• কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি সাময়িক বা পরোপুরিভাবে ওভারিকে অকার্যকর করে দিতে পারে।
• ধূমপান, অথবা অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপান।

জরায়ু বা ডিম্বনালীর সমস্যা:
• জরায়ুর টিউমার যেমন এডিনোমায়োসিস, ফাইব্রয়েড বা পলিপ।
• পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ (পি আই ডি) অথবা যেকোনো ইনফেকশনের কারণে ডিম্বনালী বন্ধ হয়ে ওভাম এবং শুক্রাণু নিষিক্তকরণের পথ বন্ধ করে দিতে পারে।
• এন্ডোমেত্রিওসিস বন্ধ্যাত্বের একটি পরিচিত কারণ। এ রোগের লক্ষণ মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, পেটে ব্যথা ইত্যাদি।
• ইনফেকশন বা এন্ডোমেত্রিওসিস জরায়ু এবং এর আশেপাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক এনাটমি নষ্ট করে বন্ধাত্ব্যের কারণ ঘটায়।  

মেল (পুরুষ) ফ্যাক্টর: 
প্রতি একশত জনের মধ্যে ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গীর সমস্যার কারণে বন্ধ্যাত্ব্ হতে পারে।  
• শুক্রাণু বা বীর্য যথেষ্ট গতিশীল না হলে বা অস্বাভাবিক গঠনগত কারণে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
• কোনো কারণে শুক্রাণু তৈরী ব্যাহত হলে, যেমন জিনগত ত্রুটি, ভেরিকোসেলি, টেস্টিসের টিউমার বা ইনফেকশন অথবা কোন ঔষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াজনিত কারণে নরমাল শুক্রাণু তৈরী বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।

পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই গর্ভধারণের হার বয়স বাড়ার সাথে সাথে কমে যায়। ৩৫ বছরের পর থেকে মেয়েদের ওভুলেশনের হার কমতে থাকে, একইসাথে শুক্রাণুর কার্যকারিতাও বয়সের সাথে সাথে কমে। তাই এই চিকিৎসায় বিলম্ব হলে সাফল্যের হারও কমে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০
এসআইএস/এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।