ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন: দীপু মনি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন: দীপু মনি

নাটোর: শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংগঠনিক কাঠামোর মাধ্যমে ধাপে ধাপে দীর্ঘ আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আজ তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জাতিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন এবং তা বাস্তবায়ন করছেন।

 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত একটানা ক্ষমতায় থাকার সুফল পাচ্ছে দেশ ও দেশের মানুষ। তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার মতো অন্যতম সেরা বিশ্বনেতার দূরদর্শী নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ জাতি ও দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে নাটোরে অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য স্থপতি প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে ১৩ বছর কারাভোগ করেছেন। এ দেশের প্রতিটি জনপদে ঘুরে বেরিয়েছেন, সাধারণ মানুষকে ত্যাগ স্বীকার করতে শিখিয়েছেন, তাদের মনে সাহস সঞ্চার করেছেন। শোষণ আর নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেছেন। তিনি সাধারণ মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন বুঝতেন, জানতেন। দীর্ঘ আন্দোলন, ৭০ এর নির্বাচন, ৭ মার্চের ভাষণ একই সূত্রে প্রোথিত হয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ মুক্তির পথে যাত্রা শুরু করেছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা-উত্তর যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল নির্মাণ করে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন। এই অগ্রযাত্রাকে নস্যাৎ করতে একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। তারা দেশকে পাকিস্তানে ফেরত নিয়ে যেতে চেয়েছিল। সংবিধানকে ধ্বংস করে জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। সেসময় নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়। ১৯টি ক্যু’র পর হত্যা করা হয় অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে। নিষিদ্ধ করা হয় ৭ মার্চের ভাষণ, নিষিদ্ধ করা হয় বঙ্গবন্ধুকে, নিষিদ্ধ করা হয় রণাঙ্গনের ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান।

দীপু মনি বলেন, ২১ বছর ধরে সামরিক ও স্বৈরাচারের যাঁতাকলে পিষ্ট এ দেশের মানুষকে পথের দিশা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ৮১ থেকে ৯৬ পর্যন্ত  আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে সফল হয়েছেন। ৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যায় দেশ। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করে।  

তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশকে আবার পিছিয়ে দেওয়া হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ১১ মাস নির্জন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়। কারাগারের বন্দি জীবনে তিনি ভেঙে পড়েননি। সেখানেই ‘দিন বদলের সনদ’-এর পরিকল্পনা করেন।

শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি বলেন, শেখ হাসিনার ২০০৯ থেকে ২০২২ একটানা ক্ষমতায় থাকার সুফল পাচ্ছে দেশ ও দেশের মানুষ। বছরের পয়লা দিনে দেশের পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। দেশের প্রত্যেক অঞ্চলে সবচেয়ে সুন্দর ভবনটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশ্রয়কেন্দ্রও বটে। গড় আয়ু বৃদ্ধি, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমানোসহ স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন অভূতপূর্ব। কৃষি এগিয়ে গেছে দৃষ্টান্ত হয়ে।  

তিনি বলেন, পরিবেশের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ বিশ্বে প্রশংসিত। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বাংলাদেশকে অনন্য মর্যাদায় আসীন করেছে। উন্নয়নশীল মধ্যম আয়ের দেশ থেকে আমরা চলেছি উন্নত দেশের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এখন আমাদের পথ চলা স্মার্ট বাংলাদেশের ২০৪১ সালের গন্তব্যে। দেশের জনসম্পদ ও পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রণয়ন করা হচ্ছে শতবছরের ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা’। উন্নয়নের মহাসড়কে  এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আমাদের সৌভাগ্য, আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন, সবার নেই।

দীপু মনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনবিচ্ছিন্ন একটি অপশক্তি দেশে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। স্বাধীনতাবিরোধী, শান্তিবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের দোসর এই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। এ দেশ থাকবে, সরকার থাকবে, কিন্তু কোনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি থাকবে না, তাদের রাজনীতি করার সুযোগ থাকবে না। দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তিকে প্রতিহত করবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, নাটোর-২ (নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শিরিন আক্তার প্রমুখ।

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জুবায়দা আয়শা সিদ্দিকা এবং নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জহিরুল ইসলাম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার এ সময় ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত নাটোর জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শিক্ষামন্ত্রী পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এরপর তিনি নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২২ 
আরএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।