পাবনা: পাবনায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি বাড়ি ও গাদন খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আকাশ সংস্কৃতির এ যুগে হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এ আয়োজন।
আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে ছিল ব্যাপক উৎসবের আমেজ। লাঠি আর গাদন খেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন দর্শকেরা। এ খেলায় জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৮টি দল অংশ গ্রহণ করেন।
যুবসমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সংস্কৃতি ধরে রাখতে জেলা কৃষকলীগ প্রতিবছরই এ আয়োজন করে আসছে। শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বরে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
খেলায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বংশ পরস্পর তারা এ খেলার চর্চা করে আসছেন। বিগত দিনে এ খেলাধুলার কোনো আয়োজন না হলেও কৃষকলীগ ধারাবাহিকভাবে গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করে আসছে। এ গ্রামীণ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দরকার বলে মনে করেন তারা। খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করলে নতুন প্রজন্ম এ খেলায় উৎসাহিত হবে বলেও মত তাদের।
খেলা দেখতে আসা দর্শক ও স্মরণ ৭১ প্রজন্ম পাবনার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তোফাজ্জাল হোসেন মামুন বলেন, ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতে শীতের সময়ে লাঠি বাড়ি, গাদন, যাত্রাপালা দেখতে যেতাম। অনেকদিন পরে শহরে এ খেলার আয়োজন দেখে সেই স্মৃতি মনে পড়লো। বিদেশী অপ-সংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা পেতে গ্রাম বাংলার এ খেলা বেশি বেশি করে আয়োজনের দাবি করেন তিনি।
আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তৌফিকুর আলম তৌফিক বলেন, কৃষকরা যেমন দেশের উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত তেমনি গ্রামীণ ঐতিহ্যের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক রয়েছে। আকাশ সংস্কৃতির এ যুগে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা টিকিয়ে রাখা ও নতুন প্রজন্মে কাছে গ্রামীণ ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্যই এ আয়োজন করা।
খেলায় চলে, ঢাক-ঢোল আর কাঁসার ঘণ্টার তালে তালে লাঠির কসরত ও বুদ্ধি মাত্রার প্রদর্শন। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও পাল্টা আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা। তাতে উৎসাহ দিতে শত শত দর্শক উপস্থিত হন মাঠে।
সমাপনী দিনে অংশগ্রহণকারী সকল খেলোয়াড়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে শেষ হয় এবারের আয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২
এসআইএ