ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অভিযান-১০ লঞ্চ দুর্ঘটনা

বছর পেরিয়ে গেলেও পরিচয় মেলেনি সমাধিস্থ ৭ মরদেহের

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২
বছর পেরিয়ে গেলেও পরিচয় মেলেনি সমাধিস্থ ৭ মরদেহের ছবি: বাংলানিউজ

বরগুনা: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এক বছর অতিবাহিত হলেও এখনও পরিচয় মেলেনি গণকবরে সমাধিস্থ সাত মরদেহের।

এছাড়া শনাক্ত হওয়া মরদেহের ক্ষতিপূরণ পাননি অনেক পরিবার। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে অজ্ঞাত পরিচয়ে দাফন করা ২১টি কবর।

গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন ৪৯ জন। আহত হন শতাধিক যাত্রী। ঘটনার পর ২৫টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর ও অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৩টি মরদেহ বরগুনা পোটকাখালী গণকবরে দাফন করে বরগুনা জেলা প্রশাসন। পরে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ১৬ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়। কিন্তু এখনও পরিচয় মেলেনি সাত জনের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হন বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের লবনগোলা গ্রামের এরাতন বিবির ছেলে, ছেলের বউ ও নাতী। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাদের কোনো হদিস মেলেনি।

পরে ডিএনএ টেস্টের ফলাফলে এ তিনজনের মরদেহ শনাক্ত হয়। কিন্তু এখনও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি তাদের কবর। এছাড়াও দেওয়া হয়নি ক্ষতিপূরণের টাকা। একই অবস্থা অন্য পরিবারগুলোরও। এদিকে এ ঘটনায় যারা প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন তারা এখনও ফিরতে পারেননি স্বাভাবিক জীবনে।

এদিকে অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৩টি মরদেহ ২১টি কবরে দাফনের পর ঠিক মত রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। ফলে অনেক কবরের মাটি ধুয়ে গর্ত হয়ে গিয়েছে। কোনোটার আবার চিহ্নিত করার সাইনবোর্ডটিও নেই। কবরগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরগুনার সভাপতি মনির হোসেন কামাল বলেন, এক বছর পার হলেও শনাক্ত হওয়া মরদেহের কবরগুলো হস্তান্তর হয়নি। পাশাপাশি সরকারি সহায়তাও পাননি অনেক স্বজন। কবরগুলোও কেউ রক্ষণাবেক্ষণ করেননি।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি এ দুর্ঘটনায় আহত অনেকেই নিজের কর্মক্ষমতা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দ্রুত কবরগুলো হস্তান্তর এবং দুর্ঘটনায় আহত অক্ষম ব্যক্তি ও পরিবারের মধ্যে সহয়তা প্রদানের দাবি জানান তিনি।

বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, দ্রুতই ডিএনএ পরীক্ষায় শনাক্ত হওয়া মরদেহের কবরগুলো আদালতের মাধ্যমে স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। নিহত পরিবারও সহয়তা পাবেন। এছাড়া কোন পরিবার স্বজনের কবর বুঝে নিতে চাইলে আবেদন করার কথা জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।