ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় সদ্য ভূমিষ্ঠ এক নবজাতককে নিয়ে পারিবারিক হট্টগোল হয়েছে। নবজাতকের নানি ইয়ারুন অভিযোগ করেন শিশুটিকে বিক্রি করে দিতে চায় তার বাবা আদর আলী।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে হাসপাতালে পুরাতন ভবনের ২১২ নম্বর গাইনি ওয়ার্ডের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় হট্টগোলের কারণে হাসপাতালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা আনসার সদস্য তাদেরকে প্রশাসনিক ব্লকে নিয়ে যান। কর্তৃপক্ষ বলছেন, যেহেতু একটি ঝামেলা হয়েছে তাই শাহবাগ থানায় জানানো হয়েছে। তারা এসে বিষয়টি দেখবে। হাসপাতাল হচ্ছে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জায়গা, অন্য কিছু নয়।
হাসপাতালের আনসার সদস্যদের প্রধান প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) আব্দুর রউফ ও (এপিসি) রাকিব মাহমুদ জানান, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় গাইনি ওয়ার্ডের সামনে রাউন্ডে থাকা অবস্থায় সদ্য ভূমিষ্ঠ এক নবজাতককে তার বাবা আদর আলী বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিশুটির নানি ইয়ারুন বেগম। সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে প্রশাসনিক ব্লকে নিয়ে যাওয়া হয়। নানী আরও অভিযোগ করেন, আনোয়ার নামে তাদের এক আত্মীয়র কাছে এক লাখ টাকায় নবজাতককে বিক্রির জন্য মৌখিক চুক্তি হয়। ঘটনার সময় দ্বিতীয় তলায় ওয়ার্ডের প্রধান গেটের বাইরে কাপড়ে মুড়িয়ে নবজাতককে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আদর আলী। তখন হাসপাতালে এসেই শিশুটিকে নিয়ে যেতে এসেছিল আনোয়ার নামে ওই ব্যক্তি। কিন্তু তাকে চিনতে না পারায় সে কৌশলে পালিয়ে যায়।
রাজধানীর ধলপুর সিটি কলোনিতে তৃতীয় স্ত্রী বিউটিকে নিয়ে থাকেন গাড়ি চালক আদর আলী। তিনি জানান, আজকে দুপুরে নরমাল ডেলিভারিতে তার আরও একটি ছেলে হয়েছে। তার খালা শাশুড়ির ছেলে আনোয়ারের কোনো সন্তান নেই। তাই তাকে দত্তক দেওয়ার জন্য চিন্তাভাবনা করছিলাম আমরা। এমন সময় আনসার সদস্যরা এসে আমাদের প্রশাসনিক ব্লকে নিয়ে যায়। সন্তান বিক্রির কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমার শাশুড়ি যে অভিযোগ করেছেন সেটা মিথ্যা।
এক পর্যায়ে নবজাতকের মা বিউটি জানান, সন্তান বিক্রির কোনো প্রশ্নই উঠে না। আমার মা যে অভিযোগ করেছেন সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার মা অসুস্থ, তার মাথা খারাপ। উনি প্রায়ই উল্টাপাল্টা কথা বলেন। তবে আমরা দত্তক দেওয়ার বিষয়টি চিন্তাভাবনা করেছিলাম।
তিনি আরও জানান, সন্তান আজকে (২ি৪ ডিসেম্বর) দুপুরেই হাসপাতালে নরমালি জন্ম নিয়েছে। তবে এখনো নাম রাখা হয়নি। আমরা সন্তান দত্তক দিলে আইন অনুযায়ী দেব। আমার স্বামী আদর আলীর কোনো দোষ নেই।
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মা ও সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতক গাইনি ওয়ার্ডে আছে। আর নানির অভিযোগের ভিত্তিতে আদর আলীকে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে সোপর্দ করেছে।
ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যেহেতু একটি নবজাতককে নিয়ে হট্টগোল হয়েছে এবং অভিযোগ রয়েছে বিক্রির। তাই বিষয়টি শাহবাগ পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। তারা এসে বিষয়টি দেখবে। আর হাসপাতাল হচ্ছে রোগীদের চিকিৎসার স্থান অন্য কিছু নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২২
এজেডএস/এমএমজেড