ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বৈদ্যুতিক পিলারে বেড়িবাঁধ সংস্কার ব্যাহত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
বৈদ্যুতিক পিলারে বেড়িবাঁধ সংস্কার ব্যাহত

বাগেরহাট: বাগেরহাটের ভাতছালা-মুনিগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ও তারের কারণে বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিঠি চালাচালি চললেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এগোচ্ছে না বাঁধ সংস্কার কাজ।

এদিকে বৃষ্টি মৌসুম শুরু হওয়ার আগে কাজ না হলে, ফের পুরোনো ভোগান্তিতে পড়বেন এলাকার মানুষ। বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজে সৃষ্টি হবে দীর্ঘ সূত্রিতা। এসব বিষয় চিন্তা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার অপসারণ করে বাঁধ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা।

জানা গেছে, সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার আগেই ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ ও পাশে থাকা বেশকিছু খুঁটি ও বৈদ্যুতিক তার অপসারণের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেয় পাইবো বাগেরহাটের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক। চিঠির উত্তরে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম প্রকৌশলী পারভেজ আলম পাউবোকে জানান, খুঁটি উত্তোলন, পুনঃস্থাপন ও অন্যান্য মালামাল বাবদ তাদের ৯ লাখ ৬৫ হাজার ২৯৫ টাকা দিতে হবে।

এরপর গত ৭ ডিসেম্বর পাউবোর কুমার স্বস্তিক আবারও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেন। ওই চিঠিতে বলা হয় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার অপসারণ এবং প্রতিস্থাপনের জন্য এই প্রকল্পে কোনো টাকা বরাদ্দ নেই। এই খাতে টাকা বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে। বরাদ্দ পেলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনুকূলে টাকা জমা দেওয়া হবে। এছাড়া চিঠিতে আরও বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অপরিকল্পিতভাবে বাঁধের ওপর খুঁটি স্থাপন করেছে। যার কারণে বাঁধ নির্মাণে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু বৈদ্যুতিক তার অনেক নিচুতে রয়েছে।

স্থানীয় চরগ্রামের আসলাম হোসেন বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে আমাদের এই বেড়িবাঁধটি নষ্ট ছিল। যার কারণে জোয়ার ভাটার ওপর নির্ভর করে আমাদের জীবন চলতে। বাঁধ নির্মাণ শুরু হওয়ায় আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি নানা কারণে বারবার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হোক।

গোলাম রসুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, বেড়িবাঁধের কারণে আমাদের গাছ, ঘর বাড়ি ও জমি নষ্ট করছি। তারপরও পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির কারণে কাজ ব্যহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত কাজ শেষ হোক।

বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক (সদর-কারিগরি) মোল্লা আবু জিহাদ বলেন, পাউবোর চাহিদা অনুযায়ী বৈদ্যুতিক খুঁটি ও লাইন স্থানান্তরের জন্য তাদেরকে ক্ষতিপূরণের জন্য চিঠি দিয়েছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সমাধান হলে খুটি ও লাইন স্থানান্তর করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, অপরিকল্পিতভাবে পল্লী বিদ্যুতের খুটি স্থাপন করায় বাঁধ সংস্কার কাজ ব্যহত হচ্ছে। এজন্য আমরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দিয়েছি। তারপরও তারা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। যার কারণে সময়মত কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।

দীর্ঘদিন পরে গত ২১ নভেম্বর বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ সংস্কার শুরু করে পাউবো বাগেরহাট। নাজিরপুর উপ-প্রকল্পের অধীনে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাতছালা থেকে মুনিগঞ্জ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।