রাজশাহী: মোটরসাইকেলের হেড লাইটের ওপর লাগানো মাইক। লাল ও কালো কাপড় দিয়ে নৌকার আদলে ঘেরা মোটরসাইকেল।
তিনি আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় সদস্য ও ‘আওয়ামী লীগ পাগল’ বলেও এলাকায় বেশ পরিচিত। বর্তমানে তিনি ললিতাহার গ্রামে বাস করছেন। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত এবং বঙ্গবন্ধুর একজন একনিষ্ঠ অনুসারী। এজন্য এলাকার লোকজন তাকে পাগল বলে ডাকেন।
আওয়ামী লীগ ভক্ত মানুষটি পরোপকারী হিসেবে এলাকার সবার কাছে পরিচিত। অসংখ্য মানুষের উপকার করেছেন তিনি। অনেক ছিন্নমূল মানুষকে নিজ জমিতে বাড়ি করে দিয়েছেন। কিন্তু তার নিজের বসবাসের জন্য ভালো জায়গা নেই। এমনকি নিজ নামে কোনো জমিও নেই। তার স্ত্রীর দেড় কাঠা জায়গায় বাড়ি করলেও সে জায়গা নিচু হওয়ায় কোনো রকমে পিলার তুলে সেই পিলারের ওপরে টিনশেড বাড়ি করে বসবাস করছেন।
এছাড়া তিনি নিয়মিত ডেঙ্গু প্রতিরোধে তার মোটরসাইকেলে করে সরকারী প্রচারণা চালান। করোনা মহামারির সময়ও তিনি নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন নিজের ও আশপাশের গ্রামে। এছাড়াও জায়গা-জমি না থাকায় বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে নিজ জমিতে বসবাসের ব্যবস্থা করেও দিয়েছেন।
সামাদের সামাজিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বামনশিকড়ের বাসিন্দা রিনা বেগম নামের এক নারী বলেন, আমার ঘর না থাকায় স্বামী সন্তান নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। এ অবস্থা দেখে আব্দুস সামাদ আমাদের তার জমিতে বাড়ি করে দিয়েছেন। এখন আমরা সেখানে নিশ্চিন্তে বসবাস করছি।
এলাকার আরেক বাসিন্দা মো. মিলন বলেন, আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আব্দুস সামাদকে আওয়ামী লীগ করতে দেখছি। তিনি একজন আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য। পরোপকারী মানুষটির নিজের থাকার মতো ভালো জায়গা নেই। তার বাড়িতে যাওয়ার জন্য একটু সরু রাস্তা থাকলেও বর্ষা মৌসুমে পানি জমে যাওয়ায় যাতায়াত করা যায় না। বাধ্য হয়ে প্রাচীরের সঙ্গে মই লাগিয়ে তার ওপরে উঠে তারা মূল রাস্তায় দিয়ে যাতায়াত করেন বলে উল্লেখ করেন তারা।
এমন ধরনের কর্মকাণ্ডে বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুস সামাদ জিল্লুর বলেন, আমি বংশগতভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আনুগত্য রেখে কাজ করি। আমার নিজস্ব জায়গা জমি নেই। মায়ের বেশ কিছু সম্পত্তি ছিল তা ছোট ভাই জালিয়াতি করে নিজ নামে করে নিয়েছে। স্ত্রীর সামান্য এক খণ্ড নিচু জায়গায় কোন মতে পিলার তুলে টিনশেড বাড়ি করে থাকছি। এভাবেই চলছে জীবনচক্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
এসএস/এএটি