ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঘের দখল চেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৩
ঘের দখল চেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

বাগেরহাট: মাছের ঘের দখল চেষ্টার প্রতিবাদে বাগেরহাটের বাঁশতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হয়েছে। রোববার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে বাগেরহাট সদর উপজেলার বড় বাঁশবাড়িয়া এলাকায় ঘের মালিক ও এলাকাবাসীরা এই মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ঘের ও জমির মালিক মো. কাওছার হোসেন জুয়েল, স্থানীয় রুহুল আমিন, তারেক, হাসিব হাওলাদার, মো. হেমায়েত হোসেন, মো. আজিম, লিমা বেগম, তাছলিমা বেগম, শাহিনুর বেগম প্রমুখ।

তারা বলেন, চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল অন্যায়ভাবে ঘের দখলের চেষ্টা করছেন। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। আমরা চাই এলাকার মানুষ শান্তিতে নিজেদের জমি ভোগ দখল করুক।

ঘের ও জমির মালিক মো. কাওছার হোসেন জুয়েল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বড় বাঁশবাড়িয়া মৌজায় ৫২ বিঘা জমিতে আমরা পারিবারিক ভাবে মাছের ঘের করি। এরমধ্যে বেশিরভাগ জমি আমার বাবা ও আত্মীয় স্বজনের। কিন্তু হঠাৎ করে রামপাল উপজেলার বাঁশতলী ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল এই ঘেরটি দখলের চেষ্টা শুরু করেন। তাকে ঘের করার সুযোগ দিতে আমাকে ও আমার ভাইদের হুমকি ধামকি দেওয়া শুরু করে। এক পর্যায়ে ২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ৩০টি মোটরসাইকেলে শতাধিক লোক নিয়ে আমাদের বাড়ি ঘেরাও করেন। তারা আমার বড়ভাই জিলাম হাওলাদার ও আমাকে উঠিয়ে নেওয়া ও মারধরের চেষ্টা করে। জীবন বাঁচাতে আমার ভাই তার লাইসেন্সকৃত বন্ধুক দিয়ে ফাঁকা গুলি করেন। আমরা ‘৯৯৯’ এ ফোন করলে বাগেরহাট মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তখন তারা চলে যায়। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে বলে পুলিশ আমার ভাইকে নিয়ে আসেন। পরে চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলকে গুলির ঘটনায় মামলা দায়ের করে আমার ভাইকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ, যা স্পষ্টতই অন্যায়।

তিনি আরও বলেন, এত কিছুর পরও মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল ও তার লোকজন থেমে থাকেনি। আমাদের ঘের থেকে মাছ ধরে নিয়ে গেছে। আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করছে। আমাদের আত্মীয় স্বজনদেরও হয়রানির চেষ্টা করছে। আমরা যাতে হয়রানি মুক্ত হয়ে মাছের ঘের ভোগদখল করতে পারি এজন্য বাগেরহাট-২ আসনের এমপি শেখ তন্ময় ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মো. কাওছার হোসেন জুয়েলের আত্মীয় আরিফিন সুলতানা বলেন, এর আগেও একবার ঘের দখলের জন্য জিলাম হাওলাদার ভাইকে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারপিট করেছিল। আমাদের কাছে মুক্তিপনও চেয়েছিল তারা। তখন পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা আমার ভাই জিলামকে ফিরে পাই।

রুহুল আমিন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, চেয়ারম্যান সোহেল যে ঘের দখল করতে চায়, এই ঘেরের মধ্যে কী তার বা তার বাপ-দাদার জমি আছে? এখানে তাদের কোনো জমি নেই। তাইলে কেন সে এই ঘের দখল করতে চায়? শুধু রুহুল আমিন না, স্থানীয় আরও অনেকে একই প্রশ্ন করে বিষ্ময় প্রকাশ করেন জমির মালিকানা না থাকার পরেও কেন একজন জনপ্রতিনিধি ঘের দখলের চেষ্টা করবেন?

মানবন্ধন শেষে জমি যার, ঘের তার স্লোগানসহ বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয়রা। মিছিল থেকে চেয়ারম্যান সোহেল ও তার লোকজনের হয়রানি থেকে সাধারণ মানুষের মুক্তি চাওয়া হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বড়বাঁশবাড়িয়া এলাকায় বিভিন্ন জমির মালিকদের কাছ থেকে জমিলিজ নিয়ে মাছের ঘের পরিচালনা করে আসছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৩
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।