ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যু: খেজুরের রস পানে সতর্কতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৩
নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যু: খেজুরের রস পানে সতর্কতা

রাজশাহী: খেজুরের কাঁচা রস পান করা নিয়ে এখন সর্বাত্মক সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। পারতপক্ষে খেজুরের কাঁচা রস পান না করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

 

গেল সপ্তাহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিপাহ ভাইরাসে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এরপর নড়েচড়ে বসেছে আইইডিসিআর।

জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। চলতি বছরের প্রথম ১০ দিনের মধ্যে এই ভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।  

বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীতে শীতের সংক্রামক রোগ এবং নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ’ শীর্ষক সম্মেলনে এই কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে গত সপ্তাহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রোগীর মৃত্যু হয়। মৃত ওই নারী গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটার বাসিন্দা।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, ওই নারী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না তা চিকিৎসার শুরুর প্রথম দিকে বোঝা যায়নি। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর চিকিৎসকরা ওই রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার আইইডিসিআরে পাঠায়। সেই রির্পোট আসতেও ৭ দিন সময় লেগে যায়। আর রোগ শনাক্ত হাওয়ার পরপরই তার মৃত্যু হয়। সুনির্দিষ্টভাবে এখনও নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো ভ্যাকসিন বা ওষুধের আবিষ্কার হয়নি।

রামেক হাসপাতাল পরিচালক বলেন, আইইডিসিআরের একটি টিম রাজশাহীতে কাজ করছে। ওই রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

এদিকে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাদুড়ের লালা বা প্রস্রাবের মাধ্যমে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়। খেজুরের গাছে বাঁধা থাকা রসের কলসে যখন বাদুর বসে লালা ঝরায় বা প্রস্রাব করে তখন তা সংক্রমিত হয়ে যায়। আর সেই কাঁচা রস যখন মানুষ পান করে তখন এই নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। আর সেই ব্যক্তি থেকে তার পরিবারের সদস্য বা স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই কাঁচা খেজুরের রস এবং অর্ধেক খাওয়া যে কোনো ফল খাওয়া উচিত নয়। কারণ নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ৭১ শতাংশ মানুষই মারা যান। চিকিৎসকরা সব সময়ই খেজুরের কাঁচা রস পান করা থেকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।

নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ পেতে রস পানের পর প্রায় ১০ দিন সময় লাগে। আর মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের লক্ষণগুলো ছয় থেকে ১১ দিন পরে দেখা যায়।  

তাই জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের মতে, খেজুরের রস ফুটিয়ে গরম করার পর তা পান করা নিরাপদ। এছাড়া খেজুরের রস থেকে তৈরি করা গুড়ও নিরাপদ। কিন্তু কাঁচা রস খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আর গাছিকে বা খেজুরের রস সংগ্রহকারীকে কাজ শেষে অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৩
এসএস/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।