ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নারী-পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিতের দাবি সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩
নারী-পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিতের দাবি সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের

ঢাকা: সম্পত্তিসহ সব ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিতসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম।

শুক্রবার (১৩ জানুযারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে এসব দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। পরিবার ও কর্মক্ষেত্রসহ সব ক্ষেত্রে নারীর শ্রম খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন নারী ছাড়া যেমন পরিবার চিন্তা করা যায় না, তেমনি সমাজও চিন্তা করা যায় না। অথচ সমাজের সর্বত্র তো বটেই আমাদের দেশের আইনেও সম্পত্তিতে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সম্পত্তিতে সমঅধিকার না থাকায় নারী যেমন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি সমাজে ও পরিবারে অধঃস্তন ও পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গীর শিকার হচ্ছে।

তারা আরও বলেন, একদিকে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে ধনী-গরীব বৈষম্য অপরদিকে পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার কারণে নারীদের দ্বৈত শোষণ ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়। পেশাজীবী ও শ্রমজীবী নারীদের অবস্থা আরও করুণ। বেতন বৈষম্য, নিরাপদ কর্মপরিবেশের অভাব, পর্যাপ্ত মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ডে কেয়ার সেন্টার না থাকা নারীদের কর্মজীবনকে দুঃসহ করে তুলছে। একজন গৃহিণী নারী সারাদিন ঘরের সব কাজ করার পরও পরিবারে তার শ্রম এবং অবদান স্বীকৃত হয় না। আবার কর্মজীবি নারী বাইরে পরিশ্রম করে উপার্জন করার পরও ঘরের সব কাজের দায়িত্ব তাকে পালন করতে হয়।

দেশে প্রতিনিয়ত নারী-শিশু নির্যাতন বেড়ে চলেছে উল্লেখ করে তারা আরও বলেন, শহরের নারীদের জন্য গণপরিবহন খুব প্রয়োজনীয় হলেও তা এখন বিভীষিকায় পরিণত হয়েছে। অথচ কোনো নির্যাতনের ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য বিচার বা শাস্তি হচ্ছে না। দেশে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন ও গণতন্ত্রহীনতায় বন্ধ জলাশয়ে আবর্জনা জমার মতো সব সংকট যেমন বাড়ছে, তেমন নারীর উপর নিপীড়নও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। একটা দেশের উন্নয়ন কখনই অবকাঠামোগত হতে পারে না। মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন, তার নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত, নারীর ভয়হীন সুস্থ স্বাভাবিক জীবন হতে পারে উন্নয়নের মানদন্ড। কিন্তু দেশে প্রতিদিন অসংখ্য নারী-শিশু নির্যাতনের ঘটনা শুধু পত্রিকাতেই আসে। অথচ কি নির্বিকার আমাদের রাষ্ট্র ও প্রশাসন!

তারা আরও বলেন, গণতন্ত্র ও সভ্যতার স্বার্থে, উন্নত রুচিবোধ ও সংস্কৃতি চেতনার আলোকে নারী-পুরুষের সৌন্দর্যমণ্ডিত জীবন ও যৌথ কর্মপ্রয়াসের বিকল্প নেই। সমাজের অগ্রগতি ও প্রগতির স্বার্থে, সুস্থ নিরাপদ জীবনযাপন ও পরবর্তী প্রজন্মের মনুষত্ব নিয়ে বেড়ে উঠার স্বার্থে নারী-পুরুষের মধ্যকার অসাম্য-বৈষম্য বিলোপ আজ সময়ের দাবি। সেই দাবি পূরণের লক্ষ্যে নারী আন্দোলন ও নারী-পুরুষের মিলিতভাবে সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রাম বেগবান করা অপরিহার্য। আমরা বিশ্বাস করি সমাজের আমূল পরিবর্তনের বিপ্লবী পথে সার্বিক মুক্তি একদিন অর্জিত হবে।

তাদের দাবিগুলো হলো- সম্পত্তিসহ সব ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করা; ঘরে বাইরে সর্বত্র নারী নির্যাতন বন্ধ করা; নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা; কর্মজীবী নারীদের নিরাপদ কর্ম পরিবেশ, মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ডে কেয়ার সেন্টার নিশ্চিত করা।

সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসুর সভাপতিত্বে ও দপ্ত সম্পাদক রুখশানা আফরোজ আশার পরিচালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ফোরামের উপদেষ্টা কমরেড রওশন আরা রুশো, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড জুলফিকার আলী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩
এসসি/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।