ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অগ্নিদগ্ধ শিশুকে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ, তবুও শেষ রক্ষা হলো না! 

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
অগ্নিদগ্ধ শিশুকে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ, তবুও শেষ রক্ষা হলো না! 

পাথরঘাটা (বরগুনা): বরগুনার পাথরঘাটায় বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে ময়লার স্তূপের আগুনে দগ্ধ হওয়া শিশু ফারজানা আক্তার (৯) মারা গেছে।  

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে চিকিৎসারত অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।

 

ফারজানার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা টি এম শাহ্ আলম।

একই দিনে রাত সাড়ে ১১টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লাকুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালমা আক্তার শিশুটিকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন।

এর আগে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের পূর্ব লাকুরতলা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পরিত্যক্ত ময়লার স্তূপে দেওয়া আগুনের পাশে অসাবধানতাবশত খেলতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ হয় শিশু ফারজানা।

ফারজানা একই বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী ও স্থানীয় ফারুক খানের মেয়ে।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুটির মা চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ফারজানা তার বাবার সঙ্গে দাদা বাড়িতে থেকে ওই বিদ্যালয়ে লেখা পড়া করত।

সরেজমিনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুলের পুরোনো ভবনের এক কোনায় কে বা কারা ময়লা আবর্জনা পোড়ানোর জন্য আগুন ধরিয়ে দেয়। অসাবধানতাবশত ফারজানা আগুনের কাছে গেলে তার শীতের পোশাকে আগুন লেগে যায়। পরে বিষয়টি স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী ফয়সাল দেখে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে পুকুর ঝাঁপ দেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালমা আক্তার জানান, ফারজানা দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। ওদের ক্লাস ছুটি হয়েছে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। তবে ফারজানা বাড়িতে না গিয়ে স্কুল মাঠে খেলা করছিল। দ্বিতীয় সিফট ১২টায় শুরু হলে আমরা ক্লাসে ঢুকে যাই। কিছুক্ষণ পর চিৎকার শুনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিচে নেমে ফারজানায় গায়ে আগুন জ্বলতে দেখি। তাৎক্ষণিক কমিনিউটি ক্লিনিকের ফয়সাল ফারজানাকে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দেয়। পরবর্তীতে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসি।

পাথরঘাটা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা টি এম শাহ্ আলম বলেন, ঘটনার পর থেকেই শিশু শিক্ষার্থীর চিকিৎসাসেবা দিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। আমার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে এসেছেন। বার্ন ইউনিটে আমি ও পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবিরও এসেছেন। তবে শিশুর শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসক বাঁচাতে পারেননি।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, শিশু শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।