ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুমিল্লায় নিখরচে চোখের চিকিৎসা পেলেন ২২ শতাধিক মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৩
কুমিল্লায় নিখরচে চোখের চিকিৎসা পেলেন ২২ শতাধিক মানুষ

কুমিল্লা: কুমিল্লার বরুড়ায় বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা পেয়েছেন ২২ শতাধিক মানুষ। বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।

 


শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা পোস্টগ্র্যাজুয়েট কলেজে সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই সেবা প্রদান করা হয়। সেবাগ্রহীতাদের বেশিরভাগই দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। চখের রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়। এছাড়া চশমা দেওয়াসহ যাদের চোখের ছানি ও মাংস বৃদ্ধির সমস্যা রয়েছে, তাদেরকেও বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শুধুমাত্র বরুড়া উপজেলাই নয়- কুমিল্লার লাকসাম, লালমাইসহ বিভিন্ন উপজেলা, পাশের চাঁদপুর, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকেও মানুষজনও এই ক্যাম্পে আসেন সেবা নিতে। এদিন সকালে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটেরর ১২ জনের একটি বিশেষজ্ঞ টিম এখানে সেবা দিতে আসেন।  

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. সালেহ আহম্মেদের নির্দেশনায় চিকিৎসক দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ডা. মো. রিপন আলী।

সকাল থেকেই পয়ালগাছা পোস্টগ্র্যাজুয়েট কলেজে উপস্থিত থেকে সেবা দেওয়ার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক জাকারিয়া তাহের সুমন।

জাকারিয়া তাহের সুমন বলেন, আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ এখানে সেবা নিতে এসেছেন। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন এখানে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আশা করছি আগামীতেও এমন সেবামূলক কার্যক্রম আমরা যৌথ উদ্যোগে করতে পারবো।  

কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক মোয়াজ্জেম হোসেন কল্লোল বলেন, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই চিকিৎসা সেবা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। ২ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ এই সেবাগ্রহণ করতে টোকেন সংগ্রহ করেন। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা সুন্দর ও শৃঙ্খলভাবে ক্যাম্পটি পরিচালনা করেছেন। মোট ছয়টি বুথে দিনব্যাপী রোগীদের সেবা প্রদান করা হয়। দেওয়া হয় বিনামূল্যে ওষুধ।

বরুড়ার কাজকামতা গ্রামের ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ খোরশেদ আলম বলেন, আমাদের এই অঞ্চলে এমন উদ্যোগ আর দেখিনি। তারা বিনা খরচে আমাদেরকে সেবা দিয়েছে, ওষুধ দিয়েছে। দোয়া করি, মহান আল্লাহ তাদের ভালো করুক। এলাকার অনেক গরিব মানুষ এই মানবিক উদ্যোগের কারণে উপকৃত হয়েছে। যাদের অনেকে টাকার অভাবে চোখের ডাক্তার দেখাতে পারেনি। তাদের কষ্ট আজকে দূর হলো।

চিকিৎসা নিতে আসা বৃদ্ধা আবেদুন নেছা বলেন, আমার বয়স ৮০ বছর। চোখে ভালোভাবে দেখি না। ডাক্তার ভালোভাবে আমার চোখ দেখেছে। এবং বলছে চোখের অপারেশন করতে হবে। আমাকে বলেছে কোন চিন্তা না করতে। সব খরচ তারা দিয়ে আমাকে ঢাকা নিয়ে অপারেশন করিয়ে আনবে। আমি অনেক খুশি হয়েছি এবং তাদের জন্য দোয়া করি। দীর্ঘদিন ধরে চোখ নিয়ে যন্ত্রণায় আছি। কিন্তু টাকার জন্য অপারেশন করাতে পারছিলাম না।  

চিকিৎসক ডা. মো. রিপন আলী বলেন, বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. সালেহ আহম্মেদ স্যারের নির্দেশনায় আজকের এই কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এতো বড় ক্যাম্প আর হয়নি আমাদের। বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছে।  

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। আমাদেরকে এখানে আনার জন্য ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।