ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবি

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৩
সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, অবসরে বয়সসীমা বাড়ানো, চাকরির আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাঙশ) সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ, সদস্য সচিব মো. রাসেল, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মো. সানোয়ারুল হক সনি, সদস্য সচিব এ আর খোকন প্রমুখ।


কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন,  ছেলেমেয়েরা অনেক কষ্ট করে তাদের সার্টিফিকেট অর্জন করে। আর এত কষ্টে অর্জিত এই সার্টিফিকেট মাত্র ৩০ বছরের মধ্যেই আর চলবে না বললে হবে না। দেশে সুযোগ না পেয়ে আজকে মেধাবীরা বিদেশে চলে যাচ্ছে। তার অর্জিত জ্ঞান ও মূল্যবোধ দিয়ে দেশকে সেবা করার সুযোগ পাচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগে বাংলাদেশের জনগণের গড় আয়ু বেড়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি যৌক্তিক। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারী আপনি, দেশের উন্নয়নে আপনার অবদান অনস্বীকার্য। আজকে তরুণ মেধাবীরা আপনার কাছে একটি দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনি তাদের কথা শুনুন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে এই মেধাবীদের প্রয়োজন। তাদেরকে ৩০ বছরের মধ্যে বেঁধে রাখলে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়।

বিশেষ অতিথি সাবেক ফুটবলার ও কোচ রেহানা পারভীন চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে প্রধানমন্ত্রীকে যুবসমাজের এই প্রাণের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত চাকরি প্রার্থীরা বিগত প্রায় ১০ বছর যাবৎ সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবি জানিয়ে আসছে। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স ২ বছর বাড়িয়ে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি এবং চাকরি শেষে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ স্বাভাবিক চাকরি প্রক্রিয়া ক্ষেত্রে অন্তরায়।

তারা বলেন, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশনে (বিসিএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে (বিজেএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর, সরকারি নার্সিংয়ে ৩৫ বছর এবং বেসরকারি স্কুল/কলেজে ৩৫ বছর। কোভিড-১৯ মহামারির সময় প্রায় সব চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি/পরীক্ষা বন্ধ ছিল। পৃথিবীর অনেক দেশ চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর বা তার বেশি থাকা সত্ত্বেও করোনা মহামারির কারণে তা আরও ২-৩ বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় যুব নীতিতে ১৮-৩৫ বছর বয়সীদের যুবক বলা হলেও ৩০ বছর হলেই তাদেরকে চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।

বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর উল্লেখ করে তারা বলেন, কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশেগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিভিন্ন রাজ্য ভেদে চাকরিতে আবেদনের বয়স সীমা ৩৫-৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৩৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, আফগানিস্তানে ৩৫ বছর। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাদশে এবং পাকিস্তানেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর।

এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে মানববন্ধনে বক্তারা অনতিবিলম্বে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর এবং অবসরে বয়সসীমাও বাড়ানোর দাবি জানান। এছাড়াও একই তারিখে একই সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া ও চাকরির আবেদন ফি সর্ব্বোচ ২০০ টাকা নির্ধারণ করে (১ম শ্রেণিতে ২০০ টাকা, ২য় শ্রেণিতে ১৫০ টাকা, ৩য় শ্রেণিতে ১০০ টাকা, ৪র্থ শ্রেণিতে ৫০ টাকা) প্রয়োজনে সরকারকে ভর্তুকির উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা জানুয়ারি ২০, ২০২৩
এসকেবি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।