ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু সংস্কার হয়নি এখনো

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু সংস্কার হয়নি এখনো

বরগুনা: বরগুনার তালতলী উপজেলার লাখো মানুষের যাতায়াতের একটি সেতু চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খোট্রারচর এলাকায় খালের উপর নির্মিত সেতুটি দেবে যাওয়ার ১৬ বছর পরেও সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ হয়নি।

দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে আছে সেতুটি। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই সড়কে চলাচলকারী লাখো মানুষকে।

শুধু সেতুই নয়, ওই এলাকার কাঁচা রাস্তাটিও সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলেই সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে সেতুটি দ্রুত সংস্কার না হলে যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বঞ্চনার শিকার অসহায় মানুষ ঘুরছেন জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দপ্তরের দুয়ারে দুয়ারে। ভোগান্তিতে খোট্রারচর গ্রামের বাসিন্দারা।

জানা যায়, উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের খোট্রারচর ও মাছবাজার সংলগ্ন জেডি ঘাট খালের উপর সেতুটি নির্মিত হয়েছে। ২০০৭ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে সেতুর বিভিন্ন অংশ ভেঙে ও মাটির নিচে দেবে যায়। দীর্ঘ ১৬ বছরেও দেবে যাওয়া সংযোগ সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। খোট্রারচর এলাকার ওই সংযোগ সেতু সংলগ্ন কাঁচা রাস্তাটিও সংস্কার হয়নি। কাঁচা রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করে। সেতু ও সড়ক দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের একাংশ খোট্টারচর এলাকা পায়রা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় এখানকার মানুষ ঝড়, জলোচ্ছ্বাসে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব মানুষের উপজেলা শহরে যাওয়ার একটি মাত্র সংযোগ সেতু। প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করে এই সেতু দিয়ে। সেতুটির নিচের লোহার পাইলিং ভেঙে গিয়ে আলাদা হয়ে গেছে। বন্যার আঘাতেও বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। এছাড়া সেতুটি একদিকে হেলে পড়েছে ছোট কোনো যানবাহনও চলাচল করতে পারে না।

স্থানীয়দের অভিযোগ দীর্ঘ ১৬ বছরেও দেবে যাওয়া সংযোগ সেতুটি সংস্কার হয়নি। ২০০৭ সালে সিডরের পর থেকেই সেতুটি এমন অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগ দূর করার কোনো চেষ্টা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও চোখে যেন ঠুলি পরে বসে আছেন। বর্তমানে সেতুটি ভয়ানক ঝুঁকিপূর্ণ, যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কৃষকদের অভিযোগ সেতু ও রাস্তা দুটোই চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয় জনতা। স্কুলে যেতে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। রোগীদের সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না। কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায় বেড়েছে খরচ। আবার রাস্তার এ দুরাবস্থায় স্থানীয় কৃষিপণ্য সময়মতো বাজারজাত না করার ফলে দীর্ঘায়িত হয়েছে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ। এতে কৃষকের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।

স্থানীয় জামেলা বেগম জানান, শুকনা মৌসুমে কোনোমতে হেঁটে চলাচল করা গেলেও বৃষ্টি আর বন্যার সময় কষ্টের সীমা থাকে না। তারা আরও জানান, সেতু তো ঝুঁকিপূর্ণ। এর বাইরে সংযোগ রাস্তার দুরবস্থাও স্থানীয় মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়েছে কয়েকগুণ।

নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ডা. মো. কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ব্রিজটি আমার ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা শহর ও পার্শ্ববর্তী খোট্রারচর এলাকাবাসীর যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। হাজারো গ্রামবাসী সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দেবে যাওয়া ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও প্রতিদিন হাজারও মানুষ বাধ্য হয়ে চলাচল করছেন। ভারী যানবাহন কয়েক কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরে যাতায়াত করে।

তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) মো. ইমতিয়াজ হোসাইন রাসেল বলেন, ব্রিজ নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই ব্রিজের ডিজাইন সম্পন্ন হয়েছে, প্রাক্কলন অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অনুমোদন পেলে নির্মাণকাজ শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।