ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ইজতেমা প্রাঙ্গণের বাইরে মোবাইল চার্জের মেলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
ইজতেমা প্রাঙ্গণের বাইরে মোবাইল চার্জের মেলা

বিশ্ব ইজতেমা ময়দান থেকে: তাবলীগ জামাতের আন্তর্জাতিক সম্মেলন বিশ্ব ইজতেমা। গত ৫৬ বছর ধরে টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে হয়ে আসছে এ আয়োজন।

দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নেন। এবারও লাখে লাখে মানুষ দুই পর্বের ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন। ইজতেমা প্রাঙ্গণে বিদেশি মেহমানদের জন্য আলাদা কামরার ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও মুসল্লিরা এতে অংশ নিয়েছেন। তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে। কিন্তু তাদের মোবাইল ফোন চার্জে দেওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই।

ময়দানের অভ্যন্তরে এ ব্যবস্থা না থাকলেও বাইরে ও গেটগুলোয় গেড়ে ওঠা অস্থায়ী দোকানগুলোয় মোবাইল চার্জের মেরা বসেছে। টাকার বিনিময়ে দোকানগুলো থেকে মোবাইল চার্জ করেন ইজতেমায় আসা লোকজন। এসব দোকান পরিচালিত হয় সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকানায়।

বিভিন্ন চা-পান, খাবারের দোকানেও মুসল্লিদের মোবাইল ফোন চার্জের ব্যবস্থা রয়েছে। মোবাইল ভেদে চার্জ নেন তারা। জানা গেছে, ফিচার ফোনে (বাটন) ফুল চার্জ দেওয়ার জন্য দোকানিরা ১০ টাকা করে নেন। ২০ টাকা নেওয়া হয় অ্যান্ড্রোয়েড ফোন চার্জে।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইজতেমার ময়দান ও আশপাশের এলাকায় ঘুরে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়। ময়দানের প্রবেশ পথ অ্যাটলাস বাংলাদেশ রোডের দুই ধারে সারি সারি অস্থায়ী দোকান দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি দোকানে হাতে লেখা সাইনবোর্ডে ‘এখানে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়া হয়’ লেখা রয়েছে। ইজতেমায় আগতদের ভিড় জমে আছে দোকানগুলোয়।

দোকানিরা টোকেন সিস্টেমে মোবাইল ফোন চার্চে দেন। ঘণ্টা দুয়েক পরে গিয়ে যার যার মোবাইল নেন মুসল্লিরা।

অ্যাটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের পাশে ইজতেমা ময়দানের গেটে রয়েছে কয়েকটি চায়ের দোকান। সেখানেও চলছে মোবাইল চার্জিং। দোকানে লাগিয়ে রাখা অসংখ্য মাল্টি প্লাগে চার্জ দেওয়া হচ্ছে শত শত মোবাইল।

আরিফ নামে এক দোকান মালিকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ময়দানে মুসল্লিদের চলাচল ও থাকার ব্যবস্থার পাশাপাশি বিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মোবাইল চার্জের ব্যবস্থা নেই। যারা ফোন চার্জ করতে চান, আমার দোকান থেকে ২০ টাকার বিনিময়ে ফুল চার্জ করে নিচ্ছেন। এ সেবা দিতে যেখান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছি, সেখানে ইউনিট প্রতি টাকা দিতে হয় আমাদের।

জামালপুরের ইসলামপুর থানা থেকে ৭০ জনের কাফেলা নিয়ে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিয়েছেন আব্দুল মোতালেব। তিনি বলেন, ময়দানে কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা ভালো আছি। তবে দিনে একবার বের হতে হচ্ছে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার জন্য। ময়দানের কাছেই দোকান, সেখানে মোবাইল ফোন দিলে ওরা টোকেন দিয়ে দেয়। আর চার্জ হলে ওই টোকেন ফেরত দিয়ে মোবাইল নিয়ে আসি। মাত্র ২০ টাকা দিয়ে এ সুবিধা পাচ্ছি, এতে উপকার হচ্ছে। বাড়িতে যোগাযোগ রাখা সহজ হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আম বয়ানের মাধ্যমে চলতি বছর ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব শুরু হয়। আগামীকাল রোববার (২২ জানুয়ারি) মোনাজাত শেষে বাড়ি ফিরবেন মুসল্লিরা। তাদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ময়দানের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসংখ্য সদস্যদের দেখা গেছে।

উল্লেখ, টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত এক পর্বে তিন দিনব্যাপী ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতো। তবে মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতি ও ফেরার সময় জন দুর্ভোগসহ নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে তাবলীগ জামাতের শুরা সদস্যদের পরামর্শে তিনদিন করে দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর ইজতেমার আয়োজন হয়নি। চলতি বছর ১৩-১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। চারদিন বিরতি দিয়ে গত ২০ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
এসজেএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।