ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘সুইস ব্যাংকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অর্থ বেশি বেড়েছে বাংলাদেশের’ 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩
‘সুইস ব্যাংকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অর্থ বেশি বেড়েছে বাংলাদেশের’  সংসদে বক্তব্য রাখছেন পীর ফজলুর রহমান। ফাইল ছবি

ঢাকা: জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেছেন, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ব্যাংকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সব চেয়ে বেশি অর্থ জমা বেড়েছে বাংলাদেশের।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা জানান।

এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

পীর ফজলুর রহমান বলেন, আমাদের অর্থিক খাতে সুইস ব্যাংকের ২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলছে, সেখানে এক বছরে বেড়েছে ৫৫ শতাংশ অর্থ জমা। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বাংলাদেশের অর্থ। ২০২১ সালে ছিল ৮৩৪৫ কোটি টাকা, ২০২০ সালে জমা হয় ৫ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। আমাদের টাকা বিদেশে যায় কানাডায় যায় সেখানে বেগম পাড়া হয়। সেখানে শুধু রাজনীতিবিদদের টাকা পাচার হয় তা নয়, সেখানে  সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা আছেন, তারাও বেগম পাড়া বানায়।  

তিনি জানান, খেলাপি ঋণ দেড় লাখ কোটি টাকা বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। যা সত্যিকার অর্থে ৪ লাখ কোটি বলে অনেকে মনে করছেন। মুষ্ঠিমেয় মানুষের হাতে এতো কোটি কোটি টাকা চলে যাচ্ছে।  এসব অর্থ আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে হবে। দুর্নীতির আখড়া এই সামান্য কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে হবে।

দেশে বড় বড় প্রকল্পগুলোয় দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ এই জাপা সংসদ সদস্যের।

তিনি বলেন, দেশে অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। কিন্তু বড় বড় প্রকল্পগুলো দিনের পর দিন সময় বাড়িয়ে ব্যয় বেড়েছে, একইসঙ্গে দুর্নীতির সুযোগ  ঘটেছে। এটা বন্ধ করতে পারলে দেশ আরও এগিয়ে যেত।  

তিনি বলেন, ২০২২ সালে আমাদের দুদকে ১৯ হাজার দুর্নীতির মামলার অভিযোগ হয়েছিল। কিন্তু দুদক মাত্র ৪ শতাংশ গ্রহণ করেছে। কিন্তু দুদক যাদের অব্যাহতি দিয়েছিল হাইকোর্ট তাদের তলব করেছে। এটার সুষ্টু তদন্ত হওয়া দরকার। সরকারি প্রকল্পের শুরুতে গলদ থাকে। সরকারি প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতি হচ্ছে। প্রায় সব প্রকল্পে মেয়াদ বাড়ানো ও ব্যয় বাড়ানোর ফলে দুর্নীতি অঙ্গাঙ্গি জড়িত। দরিদ্র মানুষের জন্য যে যে ডাটাবেজ তৈরির কথা সেটা চার বছরের প্রকল্প যা সাড়ে ৯ বছরেও শেষ হয়নি। এ প্রকল্পে ৬২৭ কোটি টাকা অপচয়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তার ২১ মাসের সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প শেষ হয় সাড়ে ৭ বছরে।  

মাদকের বিষয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কেন্দ্রে করে মাদক ব্যবসা বাড়ছে। রোহিঙ্গারা মাদক আনে কিন্তু তারা বিক্রি করতে পারে না। সেজন্য এদেশের মাদকের গডফাদাররা তা বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। এমন গডফাদার ১ হাজার ১২২ জনের নাম এসেছে। এ সংখ্যাটা অনেক বেশি হবে। এসব গডফাদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।  

নতুন করে তালিকা তৈরি করে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওবার দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উচ্চ হারে খরচের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য খাতে ৬৯ শতাংশ ব্যয় হয় ব্যক্তির পকেট থেকে খরচ করতে হয়, যার পরিমাণ ৫৪ হাজার কোটি টাকা। এর জন্য তারা গরিব হয়ে যাচ্ছে। আর সরকারের এতো এতো টাকার ওষুধ কি হচ্ছে, এখানে দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা দূর করতে পারছি না।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩
এসকে/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।