ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শিশু জন্ম নিলেই উপহার-মিষ্টি নিয়ে হাজির ইউএনও

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩
শিশু জন্ম নিলেই উপহার-মিষ্টি নিয়ে হাজির ইউএনও

ফরিদপুর: উপজেলার কোনো দম্পতির পরিবারে নবজাতকের আগমনের খবর পেলেই উপহার ও মিষ্টি নিয়ে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মঈনুল হক।

নবজাতককে কোলে নিয়ে উপজেলার নাগরিক (সিটিজেন) হিসেবে বরণ করে নেন।

আর নবজাতকের মা-বাবাকে মিষ্টি খাইয়ে উপহারের প্যাকেট হাতে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। একই সঙ্গে করে দেন নবজাতকের জন্মসনদ।  

এ উপজেলায় যোগদানের পর তিনি শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচি শুরু করেছেন ইউএনও মঈনুল হক।

এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার প্রথমদিনে নগরকান্দা পৌরসভা এলাকার নগরকান্দা গ্রামের মো. মানিক মিয়া ও সোনিয়া আক্তার দম্পতির ঘরে কন্যা সন্তান জন্মের তথ্য পান তিনি। এরপর নবজাতকের জন্য উপহার সামগ্রী, মিষ্টি ও তাৎক্ষণিকভাবে জন্ম নিবন্ধন করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে ওই দম্পতির বাড়িতে হাজির হন তিনি।

ইউএনওর এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সঠিক বয়সে সব নবজাতকের জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করতে সকলকে উদ্বুদ্ধ করা।

জানা যায়, কোনো শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে বিনা ফিতে স্থানীয় পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনে সরকারি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এ উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে শিশুর জন্ম নিবন্ধনে আগ্রহ তুলনামূলক কম। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রয়োজনে মা-বাবারা সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করিয়ে সনদ নেওয়ার জন্য ছুটাছুটি করেন বিভিন্ন ইউপি কার্যালয়ে। ততদিনে শিশুর বয়স পাঁচ-ছয় বছর হয়ে যায়। তখন নানা কারণে উক্ত এলাকার চেয়ারম্যানদের অনুমান নির্ভর তারিখে হলেও নিবন্ধন করে সনদ দিতে হয়। আর যেসব শিশুরা স্কুল-মাদ্রাসায় ভর্তি হতো না, তারা থেকে যেত জন্ম নিবন্ধনের বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে ইউএনও মো. মঈনুল হক উপজেলা ব্যাপী এ ব্যতিক্রমী কর্মসূচি শুরু করেন। তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ইউএনওর এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রশংসা করে পৌরসভার নগরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মো. মানিক মিয়া বলেন, আমার প্রথম কন্যা সন্তানের আগমনের খবর পেয়ে ইউএনও স্যার উপহার ও মিষ্টি হাতে আমার বাড়িতে হাজির হন। তারপর আমার সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের সনদ করে দিয়ে গেছেন। আমরা ইউএনও স্যারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের শলিথা গ্রামের বাসিন্দা মো. হাফিজুর মাতুব্বর বলেন, আগে জন্ম নিবন্ধন করতে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে অনেক ঘুরাঘুরি করতে হতো, আজ শুক্রবার সকালে আমাদের চমকে দিয়ে ইউএনও স্যার নিজে বাড়িতে মিষ্টি ও উপহার নিয়ে হাজির হন ও আমার বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন সনদ করে দেন। স্যারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সঠিক সময়ে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করতে পেরে আমরাও খুব খুশি।

ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের উদ্যোক্তা নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক বাংলানিউজকে বলেন, নগরকান্দা উপজেলার মানুষ জন্মনিবন্ধনে তুলনামূলক অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। তাই তাদের জন্মনিবন্ধের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে আমাদের এই ব্যতিক্রম উদ্যোগ।  

প্রথমদিনেই বেশ সাড়া পেয়েছেন জানিয়ে এ ইউএনও বলেন, প্রথমদিনে আমরা পাঁচজন শিশুর জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন করেছি। কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই জন্মনিবন্ধন করতে পেরে মানুষজন বেশ খুশি। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।