ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আমি কাদাজলে বেড়ে ওঠা সাধারণ মানুষ: রাষ্ট্রপতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩
আমি কাদাজলে বেড়ে ওঠা সাধারণ মানুষ: রাষ্ট্রপতি বইয়ের প্রকাশনা উৎসব। ছবি: বঙ্গভবন প্রেস উইং

ঢাকা: দুর্গম হাওরে বেড়ে ওঠা দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নিজেকে একজন সাধারণ মানুষ মনে করেন।
  
সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত আবদুল হামিদ বলেছেন, আমি হাওর অঞ্চলের দুর্গম এলাকায় জন্ম নেওয়া এবং হাওরের কাদা জলে বেড়ে ওঠা একজন সাধারণ মানুষ।


  
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গভবন দরবার হলে আয়োজিত রাষ্ট্রপতির আত্মজীবনীমূলক ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির প্রদত্ত ভাষণসমূহের সংকলন ‘স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছা’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে তিনি এসব কথা বলেন।
 
 আবদুল হামিদ বলেন, কোনো কিছু পাওয়া বা হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আমি কখনো রাজনীতি করিনি। স্কুল জীবন থেকে আমার রাজনীতি শুরু। তখনো বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি, কিন্তু সেই মহামানবের দরাজ কণ্ঠের উদাত্ত আহ্বান সবসময় আমাকে স্বাধিকার আন্দোলনের চেতনায় উদ্ভাসিত করত।
 
 তিনি বলেন, ১৯৬৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাত। আর সেই থেকেই শুরু হয় সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে পথচলা। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শই হয়ে ওঠে আমার পাথেয়। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৮’র সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ছাত্রলীগের ১১ দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র সাধারণ নির্বাচন ও ৭১’র মুক্তিযুদ্ধসহ সবকিছুতেই আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস একজনই। আর তিনি হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
 
 নিজেকে বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হিসেবে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, জীবনে অনেক চড়াই উৎরাই, উত্থান-পতন এসেছে। অনেক সময় চরম পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু সবকিছু মোকাবিলা করতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও অনুপ্রেরণাই শক্তি যুগিয়েছে। আমি নিজেকে বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী ভাবতেই বেশি পছন্দ করি।
 
তিনি বলেন, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ও আদর্শকে সমুন্নত রাখতে পারি এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে বেঁচে থাকতে পারি।  
 
উপস্থিত সংসদ সদস্যদের জনগণের কল্যাণে আরও বেশি আন্তরিকতা ও দরদ দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
 
‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ এবং ‘স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছা’ শীর্ষক বই দু’টির সম্পাদনা ও প্রকাশনার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন তাদের ধন্যবাদ দেন রাষ্ট্রপতি।
 
 একুশের বইমেলা উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন।
 
 ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুই আমার রাজনৈতিক গুরু, তাঁর কাছেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি। আমার রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার অভিপ্রায়েই মূলত এই আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থটি লেখা শুরু করি।
 
 বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে যারা বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পেয়েছেন তাদের সবারই আত্মজীবনী লেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, তাহলে বঙ্গবন্ধুর অনেক অজানা গুণাবলি আমরা জানতে পারবো।  
 
 ‘স্বপ্নজয়ের ইচ্ছা’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড মূলত ২০১৩-২০১৮ সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণের সংকলন। বঙ্গভবনের প্রেস উইং বইটি সংকলন ও সম্পাদনা করেছে।
 
 রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রাশিদা খানম।
 
 অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান আলোচক হিসেবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা।
  
প্রধান বিচারপতি বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, মিডিয়াসহ বিভিন্ন পেশার আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
 
রাষ্ট্রপতির বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে আলোচনার পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। প্রকাশনা উৎসবের পাশাপাশি সংসদ সদস্যদের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩/আপডেট: ২৩১৮ ঘণ্টা
এমইউএম/আরএইচ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।