ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

রাষ্ট্রপতি হামিদের আত্মজীবনী ‘অমূল্য সম্পদ’: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
রাষ্ট্রপতি হামিদের আত্মজীবনী ‘অমূল্য সম্পদ’: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আত্মজীবনীকে জাতির জন্য একটি ‘অমূল্য সম্পদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে বঙ্গভবন দরবার হলে আয়োজিত রাষ্ট্রপতির আত্মজীবনীমূলক ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির প্রদত্ত ভাষণসমূহের সংকলন ‘স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছা’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে তাঁর বাকি জীবন, বিশেষ করে যখন তিনি অবসরে যাবেন তখন রাষ্ট্রপতি হিসেবে যে সময় অতিবাহিত করেছিলেন তা লিখে রাখার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আর রাষ্ট্রপতি থাকবেন না, কিন্তু তিনি অমূল্য সম্পদটা আমাদের দিয়ে গেলেন তাঁর স্মৃতিকথার ভেতর দিয়ে। তাঁর জীবনের যে অংশটা তিনি উল্লেখ করেছেন এটা আমি মনে করি যে, একজন রাজনীতিবিদের জীবন থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসের অনেক কিছু আমরা জানতে পারবো।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার একটা অনুরোধ থাকবে রাষ্ট্রপতির কাছে, তাঁর পরবর্তী জীবনটা নিয়েও যেন তিনি একটু লিখে যান। আর বিশেষ করে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতাটা। কারণ তাঁর আমলে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে হয়েছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর যে দেশপ্রেম এবং দায়িত্ববোধ সেটারই তিনি প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সংগ্রামের পথ বেয়েই আমাদের স্বাধীনতা। আর রাষ্ট্রপতি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামেই তাঁর ভূমিকা রয়েছে। সেই পাকিস্তান আমল থেকেই শাসকদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের স্মৃতি নিয়েই তিনি বইটি লিখেছেন। তাঁর জীবনের অনেক কথাই বইটিতে আছে (আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি)।

রাষ্ট্রপতির আত্মজীবনীমূলক ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর চমৎকার হাস্যরসে ভরা জীবনী গ্রন্থটি পড়লে অনেক মজার মজার তথ্য পাওয়া যাবে। তাঁর স্কুল জীবনের স্মৃতি সেই হাওর অঞ্চলে বসবাস। আসলে বাংলাদেশের কাদামাটি মেখেই তিনি বড় হয়েছেন। সেখানকার শ্যামল সুন্দর পরিবেশে তিনি বেড়ে উঠেছেন। হাওরের কঠিন জীবনের সঙ্গে লড়াই করেই তিনি বড় হয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (রাষ্ট্রপতি) একজন সার্থক পিতা, সার্থক স্বামী। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন যেমন সার্থকতায় ভরপুর তেমনি বাংলাদেশের ইতিহাসে অল্প বয়সে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৭০ সালে এবং এরপর থেকে সাত সাতবার তিনি সংসদ সদস্য। ওই হাওর অঞ্চলে রাষ্ট্রপতিকে কেউ কখনও পরাজিত করতে পারেনি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের নির্বাচনের অনেক চেহারা আমরা দেখেছি। ভোট ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি-অনেক কিছুই আমরা দেখেছি। কিন্তু এই জায়গাটা কেউ কোনোদিন কেড়ে নিতে পারেনি। কারণ তাঁর সঙ্গে ছিল মাটি ও মানুষের যোগাযোগ। এই যে মানুষের আস্থা অর্জন করা, বিশ্বাস অর্জন করা, মানুষের কাছে যাওয়া এবং মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া এটাই তাঁর সব থেকে বড় গুণ। তিনি রাষ্ট্রপতি হয়েছেন কিন্তু একজন সাদাসিদে স্বচ্ছ বাঙালির মতই জীবন যাপন করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, একটা সাদাসিদে জীবন যাপনের মধ্যদিয়ে সুন্দরভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা, এটা তাঁর ছিল। যেটাকে একটি বড় গুণ বলেই আমি মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী রাষ্টপতি মো. আব্দুল হামিদ সম্পর্কে আরও বলেন, গত দুই টার্ম তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যখন আমরা বিরোধী দলে তিনি সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর তিনি ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সংসদকে অত্যন্ত প্রাণবন্ত রাখতেন। কারণ তাঁর একটা গুণ আছে বক্তৃতার মধ্য দিয়েও তিনি মানুষের সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যেতে পারেন।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে অন্যান্যের মধ্যে তার স্ত্রী রাশিদা খানমও বক্তব্য দেন।
 
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান আলোচক হিসেবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, মিডিয়াসহ বিভিন্ন পেশার আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
 
রাষ্ট্রপতির বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে আলোচনার পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। প্রকাশনা উৎসবের পাশাপাশি সংসদ সদস্যদের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
এমইউএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।