ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্তক্ষেপ বন্ধে ট্যানারি শ্রমিকদের ১০ দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্তক্ষেপ বন্ধে ট্যানারি শ্রমিকদের ১০ দাবি

ঢাকা: ট্যানারি শিল্পকে বাঁচাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের সুবিধা বন্ধসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। এ ল‌ক্ষ্যে শ্রমিক ছাঁটাই, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারে বাধাসৃষ্টি বন্ধ ও শ্রমিক-মালিক‌দের মধ্যে সম্পাদিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি কার্যকরের কথা ব‌লেছেন।

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়ত‌নে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান।

ট্যানারি এলাকায় শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করতে না দিলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য বা দাবিগুলো উপস্থাপনের লক্ষ্যে যদি কোনো সভা সমাবেশ করি, আর এতে যদি জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হয়। তাহলে শ্রমিকদের ওপর এটা নির্যাতনের মতো আচরণ হয়। আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, যদি ট্যানারি শিল্প এবং শিল্প নগরীতে শ্রমিকদের সভা সমাবেশ করার অধিকার না থাকে তাহলে আমরা কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।

তিনি বলেন, শ্রমিকদের সমস্যাগুলো সমাধান না হলে এই শিল্পে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যা শিল্পের মালিক, শ্রমিক-কর্মচারী এবং চামড়া শিল্প তথা দেশের অর্থনীতির জন্য আদৌ মঙ্গলজনক নয়। একই সঙ্গে শ্রমিকদের অত্যাচার করে কখনো দেশের উন্নতি হয় না।

চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে ১০ দফা দাবি গুলো হলো-

১) সরকার ঘোষিত ট্যানারি শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ৫% বাড়ানোসহ কার্যকরী করতে হবে।
২) সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স বিষয়ে সরকার অনুমোদিত ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশনের সুপারিশ অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে।
৩) ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার কারণে শ্রমিক ছাঁটাই ও নির্যাতন বন্ধ করে আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুযায়ী ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৪) শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্যনিরাপত্তা, শোভন কাজ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৫) চামড়া শিল্পনগরীতে অবিলম্বে শ্রমিকদের জন্য পঞ্চাশ (৫০) শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে।
৬) মাতৃত্বকালীন ছুটি, প্রসূতি কল্যাণ সুবিধাসহ ট্যানারিতে কর্মরত নারী শ্রমিকদের আইনানুগ প্রাপ্য সব সুবিধাদি দিতে হবে।
৭) ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে ইউনিয়নের সম্পাদিত দ্বি-পক্ষীয় চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।
৮) চুক্তি লঙ্ঘণ করে মধ্যস্বত্বভোগী ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করানো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৯) শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক ও হাজিরা কার্ড যেসব ট্যানারিতে এখনো দেওয়া হয়নি, অবিলম্বে তা দিতে হবে এবং শ্রমআইন অনুযায়ী চাকরির শর্তাবলী মেনে চলতে হবে।
১০) সরকার দ্বিতীয় পর্যায়ে এ চামড়া শিল্প নগরী গড়ে তোলার যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেখানে শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নকে যুক্ত করে প্রথম ফেজে বাদ পড়ে যাওয়া আবাসন ব্যাবস্থাসহ শ্রমিকদের জরুরি সব বিষয়গুরো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে।

ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি সহিদুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের (বিএলএফ) চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান ও ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক।

বাঙরাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
ইএসএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।