ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভবনে ফাটল, মাঠে পাঠদান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৩
ভবনে ফাটল, মাঠে পাঠদান

ঠাকুরগাঁও: শীতের দিনে সকালের রোদটা ভালো লাগলেও গরমের দিনে তা হয়ে উঠে অস্বস্তির৷ কয়েক মিনিট রোদে বসে থাকা যেন দুর্বিষহ ব্যাপার। ভবনে ফাটল ও জরাজীর্ণ হওয়ায় বিদ্যালয়ের মাঠেই পড়াশোনা করতে হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের।

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ৬ নং ভাতুরিয়া ইউনিয়নের ৪৭ নং টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি৷ 

ক্লাস চলার সময় দেখা যায়, বিদ্যালয় মাঠে চেয়ার-টেবিলে বসে পড়াশোনা করছে শিক্ষার্থীরা। গাছের নিচে ছায়ার আশায় বসলেও রৌদ্রের প্রখরতা পড়ছে অনেক শিক্ষার্থীদের ওপর। আর বিদ্যালয়ের ভবনে রয়েছে বড় ছোট মিলে অনেক ফাটল৷ ফাটল ও জরাজীর্ণ হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান৷ রোদের দাপট আর বাইরের চারপাশে থেকে আসা অধিক শব্দে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারছে না শিক্ষার্থীরা৷

বিদ্যালয় সূত্র জানা যায়, ১৯৮৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর জন্য ১৯৯৩ সালে একটি ভবন নির্মিত হয়। এরপর বিদ্যালয়টিতে ৩৪ বছর ধরে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

প্রথম শ্রেণির ছাত্র তারেক আদনান বলে, বাইরে ক্লাস করার সময় অনেক শব্দ হয়। রোদের মধ্যে ক্লাস করতে হয়। পড়ায় মন বসে না।  

বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুব্বাসিরা জানায়, আকাশের নিচে ধুলাবালির মধ্যে ক্লাস করে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। গরমে কাপড় ও শরীর ঘেমে যায়৷ প্রতিদিন তো আর স্কুল ড্রেসগুলো পরিধান করা যায় না৷ সে কারণে কাপড় ময়লা হয় আবার সর্দি লেগে যায়৷ আমরা আমাদের স্কুল দ্রুত নতুন ভবন চায়৷ 

বিদ্যায়লটির দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মনিরের বাবা দবিরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে, ছেলেকে স্কুলে পাঠানোর পর বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত খুবই চিন্তিত থাকতে হয়। তাই আমি সরকারকে বিনীত অনুরোধ করছি বিদ্যালয়টিকে দ্রুত সংস্কার করার।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজালাল বলেন, বিদ্যালয়ে যোগদানের প্রায় ৩৪ বছর অতিক্রম হয়েছে। ভবনের নাজুক অবস্থা দেখে উপজেলা শিক্ষা বিভাগে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নিয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন করেছি কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। এখন না হয় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বর্ষাকালে ওদের নিয়ে কোথায় যাব আমরা।  

তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন কিন্তু তা আজ পর্যন্ত মেরামত বা সংস্কার করার হয়নি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, পরিত্যক্ত ভবনটি অপসারণ করে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এদিকে দেখভাল নেই।  

হরিপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আজিজার রহমান বলেন, ৪৭ নং টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আসলেই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিদ্যালয়টি সংস্কারের ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আশা করি দ্রুত এর সমাধান হবে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মনসুর আহমেদ বলেন, এটি আসলে ঝুকিপূর্ণ একটি ভবন৷ আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছি। আশা রাখছি সেখানে নতুন ভবনের কাজ শুরু করা হবে৷ 

বাংলাদেশ সময়: ০০২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।