ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সাগরে মিলল অর্ধগলিত মরদেহ, স্বজন দাবি দুই পরিবারের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৩
সাগরে মিলল অর্ধগলিত মরদেহ, স্বজন দাবি দুই পরিবারের

বরগুনা: বঙ্গোপসাগরে ট্রলারে ডাকাতির ঘটনায় নিখোঁজের ১২ দিন পরে দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় স্বজন দাবি করে এক জেলের মরদেহ নিয়ে টানাটানি করে দুই পরিবার।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সকালে কাইয়ুম ও ফরিদ উভয় পরিবারের স্বজনরা দাবি করেন এ মরদেহ তাদের।

স্বজনদের এক পক্ষের দাবি, এ মরদেহ ট্রলারের কাইয়ুম মাঝির। অপর স্বজনদের দাবি, উদ্ধার মরদেহ কাইয়ুমের নয়, এটি জেলে ফরিদের। এমন জটিলতায় উদ্ধার হওয়া দুটি মরদেহ ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গিয়ে জলদস্যুদের হামালা শিকার হয়ে পাঁচ জেলে নিখোঁজ হন। এর মধ্যে ১২ জনকে উদ্ধার করা হলেও আবদুল হাই নামের এক জেলের মৃত্যু হয়। বাকি পাঁচ জন নিখোঁজ থাকার ১২তম দিনে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেন স্বজনরা। এ ঘটনায় এখনও তিন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।

পরিবারের দাবি করা কাইয়ুম মাঝি (৩৫) বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া এলাকার মৃত মানিক জমাদ্দাদের ছেলে। অপর জেলে ফরিদের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের নলী চরকগাছিয়া এলাকায়। তার পিতার মৃত হামিদ খান। এ দুজনই জলদস্যুর শিকার হওয়া ট্রলারে মাছ শিকারে গিয়েছিলেন।

কাইয়ুমের ভাই নুরুল ইসলাম বলেন, আমার দুই ভাই কাইয়ুম ও ইয়াসিন মাছ শিকারে গিয়েছিল। এদের মধ্যে ইয়াসিনকে ঘটনার একদিন পর উদ্ধার করা হলেও কাইয়ুম নিখোঁজ হয়। ঘটনার দুই দিন পর আমিসহ পাঁচ জেলের স্বজনরা মিলে ট্রলার নিয়ে সাগরে খুঁজতে থাকি। প্রথম দফায় চারদিন খুঁজে সন্ধান না পেয়ে ফিরে আসি। পরে কাইয়ুমের লাশ পাওয়া গেছে এমন খবর শুনে দ্রুত ট্রলার নিয়ে আমরা নিখোঁজ অন্য জেলেদের স্বজনসহ মোট পাঁচ জন সেখানে গিয়ে আমার ভাই কাইয়ুমের মরদেহ উদ্ধার করি নিয়ে আসি। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর একই ঘটনায় নিখোঁজ অপর জেলে ফরিদের পরিবার দাবি করে এ মরদেহ ফরিদের।  

নুরুল ইসলাম আরও বলেন, তিনদিন আগে যখন আমরা সাগরের ভাসমান অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করি তখন কাইয়ুমের চেহারা বিকৃত হয়নি। আমি চেহারা দেখে নিশ্চিত হই এ মরদেহ আমার ভাই কাইয়ুমের।

এদিকে, খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন ফরিদের মা আনোয়ারা বেগম। বলেন, মোর পোলারে মুই চিনি। মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট কইর‌্যা মোর পোলার বাম সাইডের নিচের পাডির তিনডা দাঁত নাই। এ মরদেহেরও তিনডা দাঁত নাই। ছয় ও দুই বছরের দুই শিশু কন্যা নিয়ে ছুটে এসেছেন ফরিদের স্ত্রী মিতুও। মিতুর দাবি, এ মরদেহ কাইয়ুমের না, এটা নিশ্চিত তার স্বামী ফরিদের মরদেহ।

বরগুনার সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. সায়লা ফেরদৌস আহসান বলেন, ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে আসা দুটি মরদেহ বিকৃত হয়ে গিয়েছে। দুই পরিবারের দাবির কারণে আমরা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য স্বজনদের ও মরদেহের ডিএনএ স্যাম্পল পাঠাবো। ডিএনএর ফলাফলের ভিত্তিতে মরদেহ সনাক্ত করে স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

বরগুনার পুলিশ সুপার মো. আবদুস সালাম বলেন, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে তাই উভয় মরদেহের ফরেনসিক হওয়ার পরই আমরা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করব।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।