ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হেলপার সেজে যাত্রীদের বাসে তুলে সব ছিনিয়ে নিতেন তারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২৩
হেলপার সেজে যাত্রীদের বাসে তুলে সব ছিনিয়ে নিতেন তারা

ঢাকা: কখনও যাত্রী সেজে বাসে উঠে চালক-হেলপারকে জিম্মি করে ডাকাতি করতেন তারা । কখনওবা তারা নিজেরাই হেলপার-সুপারভাইজার সেজে বিভিন্ন স্থান থেকে লোক তুলে মারধর করে যাত্রীতের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিতেন।

শুক্রবার (৩ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-গাবতলী ও সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এমন অপরাধে জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগ।  

গ্রেফতাররা হলেন- ফখরুল কবির শান্ত (২৯), মো. মনির হোসেন (৩০), মো. ইমরান (২২), মো. মুজাহিদ ওরফে বাবু (২৮), মো. রাজিব ওরফে আসিফ (২১) ও মো. সানি (২৬)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রসহ ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।  

গ্রেফতাররা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।  

ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রিসাত পরিবহনের একটি বাস যাত্রীসহ খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে ছেড়ে সুপারভাইজার-হেলপারসহ বিকেলে গাজীপুরের শিববাড়ী পৌঁছায়। সেখান থেকে পরের ট্রিপের জন্য গাজীপুর থেকে নবীনগর যায়।

নবীনগর বাস কাউন্টারে পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বাসটি রাজধানীর দারুসসালাম থানাধীন পর্বত সিনেমা হলের ডানপাশে রাস্তায় রাখে। এর পর চালক-হেলপার-সুপারভাইজার ভেতর থেকে দরজা লক করে বাসের পেছনের সিটে ঘুমিয়ে পড়ে।  

রাত সাড়ে ১২টায় ৮/১০ জনের একটি ডাকাত দল গাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে ওই স্থানে কেন গাড়ি পার্কিং করেছে তার কারণ জানতে চায়। একপর্যায়ে ডাকাত দলের নেতা গ্রেফতার শান্তর নেতৃত্বে গ্রেফতার সুমন-মনির বাসের চালক-হেলপার-সুপারভাইজারের কাছে মানিব্যাগ-মোবাইল ফোন চায়।

বাসচালক-হেলপার-সুপারভাইজাররা অস্বীকৃতি জানালে তাদের রড-হুইলরেঞ্জ-পাইপ দিয়ে উপর্যুপরি মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। এরপর তাদের চোখ ও হাত কাপড় দিয়ে বেঁধে পেছনের সিটে ফেলে রাখে।  

ডিবি প্রধান বলেন, শান্ত গাড়ি চালিয়ে কিছুদূর এসে ডাকাত দলের অন্য সদস্য ইমরানকে গাড়ি চালাতে বলে। পরে ডাকাত দলের কয়েকজন নিজেরাই যাত্রী-হেলপার-সুপারভাইজার সেজে গাবতলী-আসাদগেট-নিউমার্কেট-আজিমপুর-যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর হয়ে একইপথে এসে আমিনবাজার-সাভার-চন্দ্রার বিভিন্ন স্থান থেকে লোক তুলে মারধর করে তাদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।  

পরে তাদের চোখ ও হাত-পা বেঁধে বাসের পেছনে ফেলে রাখে। সারারাত ধরে ডাকাতির পর ভোর সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার দিকে আহত যাত্রীসহ বাসটি সাভারের কবিরপুরে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, এরই প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম ছায়াতদন্ত শুরু করে। মামলার বাদীসহ অন্য ভিকটিমের বক্তব্য পর্যালোচনা ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাত দলটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।  

শুক্রবার (৩ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-গাবতলী, সাভারের গেন্ডা-রাজপুরে অভিযান চালিয়ে ডাকাতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করে ডিবি।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে দারুসসালাম থানায় একটি ডাকাতি মামলা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র-মাদক মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২৩
পিএম/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।