ঢাকা: রাজধানীর গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেটে চালু হলো ক্যাশলেস লেনদেন। সর্বজনীন কিউআর কোড ভিত্তিক ক্যাশলেস লেনদেন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হলো রাজধানীর এ মার্কেটি।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেলে গুলশান নগর ভবনে মার্কেটের ক্যাশলেস লেনদেন ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশে’র উদ্যোগে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ও মাস্টারকার্ডের সেবা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের প্রথম ক্যাশলেস মার্কেটটির লেনদেন বাস্তবায়ন করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ইতোমধ্যে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন অনেকগুলো সেবাই এখন অনলাইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। হোল্ডিং ট্যাক্স দেওয়ার জন্য এবং ট্রেড লাইসেন্সের জন্য এখন আর কাউকে ডিএনসিসির অফিসে যেতে হয় না। অনলাইনেই ঘরে বসে এসব সেবা পাচ্ছে নগরবাসী। পর্যায়ক্রমে সব সেবা অনলাইনের আওতায় আনা হবে। আমরা রিকশায়ও কিউআর কোড ব্যবহার করবো এর ফলে অবৈধ রিকশা চলাচল বন্ধ হবে এবং নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। দ্রুতই নগরীতে স্মার্ট পার্কিং ব্যবস্থাও চালু করা হবে।
তিনি বলেন, সেবাগুলো অনলাইনের আওতায় আনা এতোটা সহজ কাজ নয়। এনালগ পদ্ধতিতে সেবা দিয়ে একটি চক্র কাজ করে। তারা অবৈধ সুবিধা পেতে অনলাইনে সেবা দিতে চায় না। আমরা অনলাইনের মাধ্যমে সেবা দিয়ে এ চক্রকে অকেজো করে দিচ্ছি। এর মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা 'সবার ঢাকা' অ্যাপ চালু করেছি। এর মাধ্যমে যেকোনো অভিযোগ জানাতে পারবে নগরবাসী এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে সেবা দেওয়া হবে। আমরা উত্তর ও দক্ষিণের দুই মেয়র মিলে নগর পরিবহন চালু করেছি। মেট্রোরেলে ই-টিকিট ব্যবহার করেই নগর পরিবহনে চলাচলের সুযোগ পাবে জনগণ। আমরা সেটি নিয়েও কাজ শুরু করে দিয়েছি।
ডিএনসিসির মার্কেটগুলোতে ডিজিটাল বিলবোর্ডে দ্রব্যমূল্যের তালিকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান মেয়র আতিকুল।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, সেবা প্ল্যাটফর্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যান রায়হান শামসি প্রমুখ।
ক্যাশলেস পেমেন্ট পদ্ধতি: বর্তমানে অধিকাংশ মার্চেন্ট পয়েন্টে পণ্য বা সেবার মূল্য পরিশোধে পয়েন্ট অব সেল ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে পস মেশিনে কার্ড প্রবেশ করিয়ে কার্ডধারী গ্রাহক কিউআর কোড ব্যবহার করে লেনদেনটি সম্পন্ন করে।
মার্চেন্ট পয়েন্টে ব্যবহৃত পস মেশিনের ইনস্টলেশন এবং মেইনটেন্যান্স সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কারণে ব্যাংকগুলো সাধারণত বৃহৎ ও মাঝারি মার্চেন্টদের পস সরবরাহ করে থাকে।
অপরদিকে, ক্ষুদ্র/অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও প্রান্তিক পণ্য বিক্রেতাদের জন্য কিউআর কোড ভিত্তিক লেনদেন ও রক্ষণাবেক্ষণ অধিক সহজ ও নিরাপদ, তাই ব্যাংকগুলো পস এর বিকল্প হিসেবে কিউআর কোড (কাগজ বা প্লাস্টিকে প্রিন্টকৃত) সরবরাহ করে ডিজিটাল পরিশোধ ব্যবস্থায় এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে।
কিউআর কোড-ভিত্তিক লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহক তার স্মার্টফোনে ইস্যুয়িং ব্যাংক/প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহার করে মার্চেন্ট পয়েন্টে প্রদর্শিত কিউআর কোডটি স্ক্যান করে পণ্য বা সেবার মূল্য পরিশোধ করবেন। এক্ষেত্রে ইস্যুয়িং ব্যাংক/প্রতিষ্ঠানের অ্যাপে গ্রাহকের নির্বাচিত ব্যাংক হিসাব বা ডেবিট/ক্রেডিট/প্রিপেইড কার্ড বা ওয়ালেট ডেবিট করে, মার্চেন্টের হিসাব ক্রেডিট করবে। তাছাড়া, ব্যাংক হিসাব ও এমএফএস ওয়ালেট ব্যবহার করেও লেনদেন সম্ভব হওয়ায় কিউআর কোড ভিত্তিক পরিশোধ ব্যবস্থায় অধিকতর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২৩
এমএমআই/আরআইএস