ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

টাঙ্গাইলে ইউপি চেয়ারম্যানের আপত্তিকর ভিডিও নিয়ে তোলপাড়!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
টাঙ্গাইলে ইউপি চেয়ারম্যানের আপত্তিকর ভিডিও নিয়ে তোলপাড়!

টাঙ্গাইল: বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের অনৈতিক প্রস্তাব ও হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠেছে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সরকার দলীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এখানেই থেমে থাকেনি ওই চেয়ারম্যান।

তার হাত থেকে রেহাই পায়নি ছেলেরাও। উপকারভোগী নারী ও ছেলেদের সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গীও করতেন।

আর এরকম বেশ কয়েকটি ভিডিও পুরো ইউনিয়নবাসীর মোবাইল ফোনে ঘুরে বেরাচ্ছে। এ নিয়ে পুরো ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। আর এই ভিডিও বাংলানিউজের কাছেও এসেছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, একজন জনপ্রতিনিধি এরকম কাজ করবেন এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তারা দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ৪ নম্বর নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে মো. মাসুদ তালুদার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।  দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি ব্যাপরোয়া হয়ে উঠেন। ইউনিয়ন পরিষদে আসা সেবা প্রার্থী নারীদের বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। আর ওইসব নারীদের মোবাইল নম্বর রেখে দেন।  

পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় কথাবলাসহ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার বা ইমোতে ভিডিও কলে কুপ্রস্তাব ও বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গী করে নগ্ন হয়েও দেখাতেন নারীদের। এ নিয়ে লোকলজ্জার ভয়ে কোনো নারীই চেয়ারম্যানের এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পেতেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভূক্তভোগি এক নারী জানান, কয়েক মাস আগে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে যান তার সন্তানের জন্ম নিবন্ধন এবং চেয়ারম্যান সার্টিফিকেটের জন্য। সে সময় চেয়ারম্যান তাকে পরদিন যেতে বলেন। তার কথা মতো তিনি পরদিন আবার ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তিনি তাকে পরিষদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান এবং তার মোবাইল নম্বর নেন। এরপর তিনি (চেয়ারম্যান) তাকে সার্টিফিকেট ও জন্মসনদ দ্রুত পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান তাকে প্রতিনিয়তই তার মোবাইলে ফোন করতে থাকে।  

এক পর্যায়ে তার সঙ্গে ফেসবুকও সংযুক্ত হন চেয়ারম্যান মাসুদ তালুকদার। কিছুদিন পর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জরে ভিডি কল দিয়ে তাকে কু-প্রস্তাব এবং নগ্ন হয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গী করতে তাকেন। পরে ভিডিও কলটি স্ক্রীন সট দিয়ে রেখে দেন তিনি (ওই নারী)। পরবর্তীতে ওই নারী ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বললে চেয়ারম্যান তাকে মোবাইলে ফোন করে বিরক্ত করা বন্ধ করে দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন সদস্য জানান, চেয়ারম্যানের এ বিষয়টি নিয়ে পুরো ইউনিয়নে সমালোচনা শুরু হয়েছে। ভিডিওটি তারাও দেখেছেন। এটা তাদের এবং ইউনিয়ন বাসীর জন্য লজ্জাজনক বিষয়। একজন জনপ্রতিনিধির এমন আচরণ ইউনিয়নবাসীর মানুষ প্রত্যাশা করেনি।

এ বিষয়ে নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাসুদ তালুকদার জানান, ভিডিওটি এডিট করা।  প্রতিপক্ষ তাকে ফাঁসাতে এরকম ভিডিও বানিয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠাণ্ডু বাংলানিউজকে জানান, এটা নারী আর চেয়ারম্যানের নোংরামি। তাই বিষয়টি চেয়ারম্যানের কাছেই জিজ্ঞেস করা ভালো।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।