ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আড়াই কোটি টাকা পেল ৮২টি বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২৩
আড়াই কোটি টাকা পেল ৮২টি বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র

ঢাকা: বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর মান উন্নয়নে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮২টি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রকে দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে সরকার। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের ৪১টি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রকে প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকার চেক রয়েছে।

বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে মাদকাসক্ত নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, সুরক্ষা সেবা বিভাগ আয়োজিত বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর মান উন্নয়নের জন্য সরকারি আর্থিক অনুদানের চেক তুলেদেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মো. আব্দুল ওয়াহাব ভুঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরসহ সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকাসক্তি বর্তমানে আমাদের দেশের একটি বড় সমস্যা। এ সমস্যা আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রমে হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে এবং আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রমের স্বাভাবিক গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের দেশের মূল সম্পদ হচ্ছে জনশক্তি। এই জনশক্তির দুই-তৃতীয়াংশ হচ্ছে তরুণ ও যুবসমাজ। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের তরুণ ও যুবসমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আজ মাদক নামক মরণ নেশায় আক্রান্ত। ফলে আমাদের দেশ আজ ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মাদক সেবনের ফলে আমাদের তরুণ ও যুবসমাজ জীবনীশক্তি, সৃজনশীলতা, নৈতিকতা ও মেধা শক্তি হারিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। বাড়ছে চুরি, ছিনতাই, খুন ও সন্ত্রাস।

তিনি বলেন, তিনভাবে আমরা মাদক সমস্যার সমাধান করে থাকি। একটি হচ্ছে মাদকের সরবরাহ হ্রাস, অন্যটি মাদকের চাহিদা হ্রাস ও এবং তৃতীয়টি হচ্ছে মাদকের অপব্যবহারজনিত ক্ষতি হ্রাস। এই তিনটি দিক নিয়েই আমাদের সরকার কাজ করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে ‌‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন। সেই লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ২০১৮ সালে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের মাদকের ভয়াল আসক্তি থেকে মুক্ত করতে প্রতিটি জেলায় একটি করে সরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র করা ও বেসরকারি কেন্দ্রগুলোর জন্য সরকারি অনুদান বাড়ানো হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। মাদকাসক্তদের চিকিৎসা কার্যক্রম আরও উন্নত ও সহজলভ্য করার জন্য সরকারি সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আর্থিক অনুদান দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিগত তিন অর্থবছরের ন্যায় চলতি অর্থ বছরেও সরকার অনুদান দেওয়ার জন্য বাজেটে বরাদ্দ দিয়েছে। বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯১টি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রকে এক কোটি টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৩৭ টি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রকে এক কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪০ টি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রকে এক কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮২টি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রকে দুই কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে  ঢাকা বিভাগের ৪১ টি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রকে প্রায় এক কোটি পঁচিশ লাখ পঁচানব্বই হাজার টাকা অনুদানের চেক আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে।

সরকার যে উদ্দেশ্যে এই অনুদান দিচ্ছে অর্থাৎ মাদকাসক্তি চিকিৎসা সেবা আরও উন্নত ও সহজলভ্য করার জন্য সেটি যাতে শতভাগ অর্জিত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। অনুদান পাওয়া অর্থ বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রগুলো নীতিমালা অনুযায়ী  অর্থ ব্যয় করবে বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করছি। একই সঙ্গে নোডাল এজেন্সি হিসেবে মাদাকাসক্তি নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে এ কাজটি নিবিড়ভাবে মনিটরিং করতে হবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯,২০২৩
জিসিএসই/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।