ঢাকা: বগুড়া সদর থানা এলাকায় মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় দ্বন্দের জেরে মো. লিটন শেখ নামে একজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার প্রধান আসামি মোমিনসহ (২৭) চারজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩। আটক অন্যরা হলেন- মো. তৈয়ব (২৯), মো. তানজিল (২৮) ও মো. রাহুল (২০)।
শনিবার (৮ এপ্রিল) দিনগত রাতে রাজধানীর মতিঝিল এবং ওয়ারী এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলির নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
ঘটনার বিবরণে তিনি জানান, আটক তৈয়ব, তানজিল ও রাহুল আপন ভাই এবং মোমিন তাদের আপন মামা। ভিকটিম লিটন একই গ্রামের তাদের প্রতিবেশী। আসামিরা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রি করতো। রাহুল মাদক বিক্রির সময় তাদের প্রতিবেশী সালমান নামে একজন বাধা দেন। এ নিয়ে সালমান ও রাহুলের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এর জেরে গত বছরের ১৬ জুলাই রাহুল এবং সালমান বাকবিতণ্ডা ও একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়ায়। এ সময় লিটন ঘটনাস্থলে আসেন, লিটনও তাদের মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে আসছিলেন।
একপর্যায়ে রাহুল তার দুই ভাই তৈয়ব ও তানজিল, মামা মোমিন, নানা সোলাইমান, খালা রিতা বেগম এবং খালাত ভাই রাব্বিসহ অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন মিলে লিটনের বাড়িতে হামলা চালায়। প্রথমে লিটনের বোন ডলি বেগমকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। মোমিন তার হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে লিটনের মাথায় কোপ দিলে গুরুতর আহত হয়।
এ অবস্থায় তানজিল, রাহুল, তৈয়ব, সোলাইমান ও রাব্বি বাঁশের লাঠি দিয়ে লিটনকে নির্মমভাবে পেটায়। লিটনের ভাই রাশেদ এবং বোনজামাই আজিজুল এগিয়ে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করে। একপর্যায়ে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন সেখানে ছুটে আসলে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন আহতদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। লিটনের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠান। ১৭ জুলাই ভোরে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিটন মারা যান।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পর আসামি রিতা বেগমকে গ্রেফতার করতে পাররলেও অন্যান্যরা আত্মগোপনে চলে যায়। পলাতক থাকা অবস্থায় আসামি সোলাইমান মারা যান।
দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর অবশেষে র্যাব-৩ চার আসামিকে আটক করেছে। তবে, মামলার ৬ নম্বর আসামি রাব্বি এখনো পলাতক আছেন, তাকে আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
লে. কর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, আটক চারজন ঘটনার পর ঢাকার গোপীবাগে আত্মগোপন করেন এবং একটি টেইলার্সে নাম ও পরিচয় গোপন করে দর্জির কাজ করে আসছিলেন। তারা সবাই মাদকাসক্ত এবং মাদক ব্যবসায় জড়িত।
তিনি জানান, মোমিন ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে দুইবার মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতার হয়ে ৪৫ দিন এবং ৫১ দিন কারাভোগ করেছেন। তানজিলের নামে বগুড়া সদর থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে এবং তৈয়বের নামে বগুড়ার শাহজাহানপুর থানায় ২০০৪ সালের একটি মারামারি মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৩
পিএম/এমএমজেড