ঢাকা, সোমবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় সরকারি পুকুরের মাটি চুরির চেষ্টা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৩
বগুড়ায় সরকারি পুকুরের মাটি চুরির চেষ্টা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার

বগুড়া: বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় রাতের আঁধারে সরকারি খাস পুকুরের মাটি চুরি করতে গিয়ে গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে পিছু হটেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আহসান হাবিব সবুজ ও তার লোকজন। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি।


 
বুধবার (১২ এপ্রিল) শিবগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাটি কাটার এক্সকাভেটর মেশিন জব্দ করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের হরিপুর-জাবারিপুর গ্রামে পুকুরের মাটি চুরির চেষ্টা করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোকামতলা ইউনিয়নের হরিপুর-জাবারিপুর সরদার পাড়ায় প্রায় আড়াইশ বছরের পুরোনো দুই একর ১০ শতাংশ আয়তনের খাস পুকুর রয়েছে। গ্রামবাসী কৃষি জমিতে পানি সেচ ও প্রকৃত মৎস্যজীবীরা ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করতেন পুকুরটিতে। কিন্তু সম্প্রতি পুকুরটি ইজারা নিয়েছেন মোকামতলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আহসান হাবিব সবুজ। গত ডিসেম্বর মাসে তিনি পুকুরটির পানি সেচ মেশিন দিয়ে সরিয়ে ফেলেন। এরপর পুকুর পাড়ের মাটি কাটার চেষ্টা করেন তিনি। ওই সময় গ্রামবাসী পুকুরের পাড় রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। ফলে পুকুরের পাড় কেটে মাটি বিক্রি করতে পারেননি ইউপি চেয়ারম্যান।

এদিকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেশিন ও ১০টি ট্রাক নিয়ে ওই পুকুর পাড়ের মাটি কাটতে যান চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। এসময় আশপাশের তিন গ্রামের মানুষের ধাওয়া খেয়ে ট্রাক নিয়ে পিছু হটেন তারা।

হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা তোতা মিয়া বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে চেয়ারম্যানের লোকজন মাটি কাটতে এলে আমরা বাধা দিই। চেয়ারম্যান গ্রামের লোকজনকে বলেন, পুকুর থেকে তিন ফুট মাটি কাটার অনুমতি রয়েছে। এসময় চেয়ারম্যানের লোকজন আমাদের ও নারীদের গায়ে হাত তুলেছেন।

সরদারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোহসিন আলী জানান, মাটি কাটতে বাধা দিলে চেয়ারম্যানের লোকজন বলেন, মোকামতলা গেলে তোদের হাত পা কেটে নেব। সাহস বেড়ে গেছে? চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কথা বলিস?

জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবকসলীগ নেতা আহসান হাবির সবুজ বলেন, গ্রামের লোকজনই পুকুরের পাড় কেটে জমি বের করেছে। দুই একর ১০ শতাংশের মধ্যে এক একর পুকুর রয়েছে। পুকুরের চাইতে পাড় বড় হওয়ায় এবং পুকুরের তলদেশ উঁচু-নিচু থাকায় মাটি কেটে সমান করার জন্য গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের ধারণা, আমি পুকুরের পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাব।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে কুলসুম সম্পা বলেন, সরকারি পুকুর থেকে মাটি কাটার কোনো সুযোগ নেই। মঙ্গলবার রাতে সেখানে পুকুরের মাটি কাটার অভিযোগ শুনেছি। বুধবার সকালে সহকারী কমিশনার (ভুমি) পুকুরটি পরিদর্শন করে মাটি কাটার মেশিন জব্দ করে সেটির ব্যাটারি খুলে নিয়ে এসেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৩
কেইউএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।