ঢাকা: চৈত্রের শেষভাগে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহের তীব্রতা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। শেষদিনে এসে পৌঁছে গেছে 'তীব্র তাপপ্রবাহ'।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দেশের তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গেছে। এটা আরও বাড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানেও বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ।
বৈশাখের শুরুটা কাটবে এভাবেই। ১৬ এপ্রিল থেকে তাপপ্রবাহের মাত্রা কমতে পারে। এরপর থেকে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে ক্রমান্বয়ে। আর এপ্রিলের শেষের ভাগে বাড়ব পারে কালবৈশাখী।
এক পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
শুক্রবার অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাজেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগসহ এবং ঢাকা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। ঢাকায় পশ্চিম/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার।
আগামী দু'দিন তাপমাত্রাও আরও পারতে পারে। বর্ধিত পাঁচদিনে আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মোংলায় ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস; রাজশাহী, ঈশ্বরদীতে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যশোরে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস; ফরিদপুরে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস; কুমারখালীতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২০২১ সালে ঢাকা ও চুয়াডাঙ্গায় তার আগের সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ওই বছর ২৫ এপ্রিল। সেদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আর ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল রাজশাহীতে থার্মোমিটারের পারদ উঠেছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রিতে, যা তার আগে গত আট বছরের মধ্যে ছিল রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
১৯৯৫ সালে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল চুয়াডাঙ্গা ও ঈশ্বরদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা উঠেছিল ১৯৬০ সালে।
আবহাওয়া অফিস আগেই জানিয়েছিল, আগামী সপ্তাহের প্রথমার্ধ পর্যন্ত দেশের ওপর দিয়ে মৃদু (৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এক্ষেত্রে রাজশাহী, খুলনা ও ঢাকা বিভাগে দু'এক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে তীব্র (৪০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) আকারে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
ইইউডি/আরআইএস