ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভূমি উন্নয়ন কর বিষয়ে কর্মকর্তাদের ৯ নির্দেশনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৩
ভূমি উন্নয়ন কর বিষয়ে কর্মকর্তাদের  ৯ নির্দেশনা

ঢাকা: ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে ভূমি কর্মকর্তাদের ৯ নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখানকার ৯টি অনুচ্ছেদ এবং সংশ্লিষ্ট উপঅনুচ্ছেদে প্রদত্ত নির্দেশনা সম্পর্কে জ্ঞাত থাকলে ভূমি মালিক অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের সময় তার সেবা পাওয়ার অধিকারের বিষয়ে সচেতন থাকতে পারবেন। তারা আরও জানতে পারবেন ভূমি কর্মকর্তারা তাদের কী বিষয়ে সেবা দেবেন এবং সেবা দেওয়ার সময় কী বিষয়ে লক্ষ্য রাখবেন।

ভূমি মন্ত্রাণালয়ের দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো:

১. অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে নাগরিক নিবন্ধনের ক্ষেত্রে করণীয়
 একজন ভূমি মালিক নাগরিক নিবন্ধন করে খতিয়ান যুক্ত করার সর্বোচ্চ সাত কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নিজ দাপ্তরিক আইডি থেকে ওই হোল্ডিং যাচাই ও সমন্বয় করে অনুমোদন করবেন। এর ব্যত্যয় হলে তা অদক্ষতা হিসেবে গণ্য করা হবে।

নাবালক বা প্রবাসী ভূমি মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে তাদের নাগরিক নিবন্ধনে নাবালক বা প্রবাসীর জন্মনিবন্ধন বা পাসপোর্ট দিয়ে নাগরিক নিবন্ধনের ব্যবস্থা করতে হবে। নাবালক বা প্রবাসীর আইনানুগ অভিভাবক বা প্রতিনিধির মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ব্যবস্থা করবেন।

খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিকের নাম জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে মিল না থাকা এবং নারীদের ক্ষেত্রে রেকর্ডে স্বামীর নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতার নাম ইত্যাদি কারণে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের আবেদন বাতিল করা যাবে না।

২. মালিকের নামে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়
শুধু হোল্ডিংধারী ভূমি মালিকের নামে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে হবে। ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধকারী বা ভাড়াটিয়ার নাম দাখিলায় যুক্ত করা যাবে না।

৩. ব্যক্তির ক্ষেত্রে আংশিক ভূমি উন্নয়ন কর আদায়
যৌথ মালিকানার ক্ষেত্রে কোনো একজন মালিক নিজ অংশের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে চাইলে নামজারির (মিউটেশন) মাধ্যমে আলাদা হোল্ডিং তৈরি করতে হবে।

৪. জমির ব্যবহারভিত্তিক ভূমি উন্নয়ন কর আদায়
গ্রামের বাড়িগুলো পাকা ভিটির না হলে কৃষিজমি হিসেবে গণ্য করে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে হবে। কিন্তু যদি রেকর্ডে বাড়ি উল্লেখ থাকে কিংবা বাস্তবে বাড়িটি পাকা ভিটির হয়, তাহলে আবাসিক হারে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারিত হবে।

একই দাগের জমি আংশিক কৃষি ও আংশিক অকৃষি (শিল্প, বাণিজ্য ইত্যাদি) কাজে ব্যবহৃত হলে ব্যবহারের ধরণ অনুযায়ী হারাহারিভাবে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ করে আদায় করতে হবে।

৫. অগ্রিম ভূমি উন্নয়ন কর আদায়
কোনো ভূমি মালিক ইচ্ছে করলে বকেয়া ও হাল সনের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করার পর পরবর্তী তিন বছরের ভূমি উন্নয়ন কর অগ্রিম প্রদান করতে পারবেন।

পরিশোধিত অগ্রিমের মেয়াদের মধ্যে ভূমি ব্যবহারের ধরণে পরিবর্তন বা সরকারি নির্দেশনার কারণে ভূমি উন্নয়ন করের দাবি বেড়ে গেলে বর্ধিত হারে ভূমি উন্নয়ন কর বকেয়া হিসেবে আদায়যোগ্য হবে।

একই হোল্ডিং-এ হাল সন পর্যন্ত বা একাধিক বছরের অগ্রিম ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধিত থাকা অবস্থায় আংশিক হস্তান্তর বা উত্তরাধিকারসূত্রে নামজারি (মিউটেশন) হলে নতুন হোল্ডিংধারী হোল্ডিং গ্রহণের তারিখ থেকে নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করবেন।

৬. সংস্থার ক্ষেত্রে আংশিক ভূমি উন্নয়ন কর আদায়
সংস্থার ক্ষেত্রে ভূমি উন্নয়ন কর বছরভিত্তিক আংশিক আদায় করা যাবে। আংশিক আদায়ের পর বকেয়া থাকলে ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেমে বকেয়া দাবি প্রদর্শিত হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভূমি উন্নয়ন কর কোনোক্রমেই মাসভিত্তিক আদায় করা যাবে না।

৭. মওকুফ দাখিলা
২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষিজমির ক্ষেত্রে হোল্ডিং প্রতি ১০ টাকার মওকুফ দাখিলা প্রতি বছর একবারই আদায়যোগ্য হবে। এ ক্ষেত্রে হোল্ডিং-এ একাধিক অংশীদার থাকলে প্রত্যেকে আলাদা আলাদাভাবে ১০ টাকার মওকুফ দাখিলা সংগ্রহ করতে পারবেন।

কৃষিজমির অবিভক্ত খতিয়ান বা হোল্ডিং ২৫ বিঘার ঊর্ধ্বে হওয়া সত্ত্বেও অংশীদারদের প্রত্যেকের অংশ আলাদা করে বিবেচনা করা যাবে না। কোনো অংশীদার নিজের অংশ আলাদা করতে চাইলে স্বীয় নামে হোল্ডিং খুলে মওকুফ দাখিলা সংগ্রহ করবেন।

নিষ্কর ও ইকোনোমিক জোনের ভূমি উন্নয়ন কর বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ সংক্রান্ত নির্দেশনাসমূহ যাচাইয়ের মাধ্যমে নিষ্কর এলাকা নির্ধারণ করবেন। নিষ্কর হোল্ডিং-এর ক্ষেত্রে প্রতি বছর ১০ টাকা দিয়ে মওকুফ দাখিলা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে অনলাইন দাখিলায় অনুমোদিত মওকুফ লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে।

পহেলা বৈশাখ থেকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সব ভূমি অফিসে সংরক্ষিত অব্যবহৃত ও আংশিক ব্যবহৃত সব দাখিলা বহি প্রত্যাহার করে কালেক্টর জেলা ট্রেজারিতে সংরক্ষণ করবেন এবং এর বিবরণী ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।

৯. পহেলা বৈশাখ থেকে শতভাগ অনলাইনে আদায়ের স্বার্থে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেমে ধাপ ও অঞ্চল নির্ধারণ করে প্রত্যেকটি হোন্ডিং-এর দাবি এবং মৌজাভিত্তিক দাবি শতভাগ অনলাইনে এন্ট্রি দিবেন।

ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে land.gov.bd ওয়েব পোর্টালে নিবন্ধন করে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে অনলাইনেই দাখিলা সংগ্রহ করা যাচ্ছে। ১৬১২২ নম্বরে কল করে (বিদেশ থেকে +৮৮০ ৯৬১২৩ ১৬১২২) অথবা সরাসরি www.facebook.com/land.gov.bd ফেসবুক পেজে মেসেজ পাঠিয়ে অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর বিষয়ে কোনো কিছু জানার থাকলে প্রশ্ন করে বিস্তারিত জানা যাবে বলে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৩
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।